ভোলা দেবনাথ | গুচ্ছ কবিতা
ভোলা দেবনাথ | গুচ্ছ কবিতা
এক.
লাশ হয়েই জন্ম আমার

লাশ হয়ে ভূমিষ্ঠ
অজানা পৃথিবীর কোনো জঠরে
হাত বাড়ায় প্রথমে
বাতাস,
বাতাস জানে না ওর জলীয়বাষ্প-
ধুয়ে নেবে লাশ,
প্রাণ সঞ্চারণে আলোর
হাতছানি।
লাশে খেলে অক্সিজেন
কার্বনডাই অক্সাইড কতিপয় জীবাণু
হেসে ওঠে লাশ
কাঁদেও,
সময় শেখায় সময়ের মাঝে
নিষ্ঠুর নির্মমতা
আবার,
বেঁচে থাকা অণুপ্রেরণা
লীলার বাগানে বহুমাত্রিক
লাশ হয়েই থেকে যাবো একদিন।

ভয়
মৃত্যুকে
নিছক এক ছেলেমির প্রলাপ
বিন্দু থেকে সিন্ধু
মহাপ্রলয়ের মহানায়ক
সাবধান,
লাশ হয়েই জন্ম আমার
লাশ হয়েই মৃত্যু আমার
ভালোবাসি বড্ড
নির্ঘণ্ট
ভালোবাসি বড্ড
লাল, রক্তিম সূর্যকে

আমি যে লাশ
আমার জন্ম নেই, নেই মৃত্যু
নেই অনুভূতি, নেই আগামী
আমি নিত্য আমি নিত্য
আমি নিত্য। 

দুই.
ঘুম ভাঙে জাগে পৃথিবী

সকালের ঘুম ভাঙায় শিশিরস্নাত ভোর
দলবদ্ধ এক ঝাঁক শালিক পাতিকাক,
দলছুট বুলবুলি দোয়েল ডানায় ভূঁইফোড়
ভাদ্রের কুকুর আনাগোনায় মাতাল দিক,
অপেক্ষমাণ পরিবেশ তারপর প্রকৃতি
মিশেছে নিঃসঙ্গতার নৈকট্যে মৌন সময়ে
আসবেন প্রতীক্ষিত কুয়াশাভেদে অতিথি
খোদিত কারুকাজে বিচিত্র পৃথিবী দাঁড়িয়ে,
উড়াও প্রাণ ছড়াও হাসি সুবাসিত মানদণ্ডে
রাতভর ঝমঝম বৃষ্টি কাশবনে ফুলে ফুলে
শরতের স্বচ্ছতায় নিকষমেঘে দাগ কলঙ্কে,
শিউলিরা ফোটবেনা ভোরে ভাসবেনা জলে
মাটির গন্ধে শিকড় টানে গভীর-গভীরতায়
কৃষ্ণকলি খেলা করে নগ্নে মনের উঠোনে
আঁকি জগৎজুড়ে আকাশ-পাতাল সরলতায়
স্বপ্নবুনন ঘাটে কারিগর আমি জ্বলি নিত্য আগুনে।

তিন.
মুখোশ

নৈঃশব্দ্যের মৃদু কম্পন- শরীর জুড়ে এক ভুবন
পৃথিবীর অবয়বে গাছ, লতা-পাতায় দীর্ঘ সহবাস
সহজাত নৈসর্গিক স্ফুলিঙ্গে স্ফুলিঙ্গে মাথা নাড়ে
ছোঁয়্ গা গাঁয়ের প্রাগুক্ত ভাসমান মুখোশ উচ্চৈঃ
গায়ের চিহ্নিত ঠোঁটগুলো অবিশ্বাস্য বেপরোয়া
বদলায় অহোরাত্র কাকে কখন সঁপে অবলীলায়
নিঃসঙ্গতায় নিরালার বসতঘরে সলতে নিষ্ঠুরত
পথ দেখায়-না অন্ধত্ব নিবন্ধে হাঁটে গভীরতায়…।

সাবস্ক্রাইব করুন! মেইল দ্বারা নিউজ আপডেট পান

Error
Whoops, looks like something went wrong.