মালেকা ফেরদৌস ।। কয়েকটি কবিতা
মালেকা ফেরদৌস ।। কয়েকটি কবিতা
আমার বাংলাদেশ-৬

নীলগিরি পাহাড় আর সমুদ্রের দোহাই
দোহাই বট আর দেবদারু বৃক্ষের,
ঝাঁক বেঁধে আসা সুন্দর পাখিদের দোহাই,
সবুজ হে তরুণেরা, একবার, শুধু একবার
হাতে হাত রেখে দাঁড়াও, মেরুদন্ড টান করে দাঁড়াও
ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইল জুড়ে দাঁড়াও,
লাঞ্ছনা খুটে খাওয়া প্রেতাত্মার বিনাশ তবেই..
নাগিনীর হিস হিস,বিষের উর্ণাজাল ছিন্ন করে দাও প্রভু!
হার না মানা নিশ্বাসের লবন আমাদের টেনে নিতে দাও,
আমরা তো কেবল তোমার অস্তিত্বেই বিশ্বাস করি।
বিশ্বের সব নির্যাতিত মানুষের স্বদেশ হোক আমার বাংলাদেশ-
হোক সবার সার্বভৌম ভূ-খন্ডের অধিকার।

আমার বাংলাদেশ। [ পাঁচ ]

এখন কোন সময় নিয়ে কথা বলব? ক্ষুধা নাকি
আমাদের সব স্বপ্ন নির্বাসনে পাঠানোর গল্প?
কেন আজ কাতরতায় পার হয় প্রতিটি স্বাধীনতার বছর?
কেন কাঁদে স্বাধীনতা- আমার বাংলাদেশ!
আমার সূর্য সন্তানের রক্তের স্রোত বুড়িগঙ্গা হ’য়ে লাল হয় মেঘনার জল,
শোকের স্বরগ্রাম তোলে বঙ্গোপসাগর থেকে পৃথিবীর সব মহাসাগর?
সিদ্ধহস্ত খুনীর অদৃশ্য হাতের থাবায় ডানাভাঙ্গা পাখির মতই কেন
তড়পায় আমার স্বাধীনতা? এ কেমন শোক? প্রতিহিংসা?
শিশুর মৃত্যু, লুন্ঠিত নারীর সম্ভ্রম!
যে সফলতার গল্প হয়- শোকের বিলাপ!
যে সবুজ, রক্তের দাগে লাল হয়,সে সফলতা আর রক্তের দাম দেব কতকাল?

আমার বাংলাদেশ। [ চার ]

বার বছর বয়স থেকে আমি গনতন্ত্রের সংজ্ঞা মেলাতে চেয়েছি
বরফ শীতল নির্বাক মা আর কোনদিন বিজয়ের গল্প করেননি,
আমরা তো হানিফের ঘোড়ার অপেক্ষায় ছিলাম,সময় অন্ধকারে
গড়াতে থাকে, চারদিকে লুটেরা,ডাকাত,ধর্ষক আর খুনিদের উল্লাস
বই,বাবার পান্ডুলিপি পুড়তে থাকে, কারণ জানিনা,বুঝবার চেষ্টা করি।
নিজের বাগানের ফল,খেতের ফসল বর্গীরা লুটে নেয় তাকিয়ে দেখি,
বর্গীর ভয়ে অতটকু আমায় শহর গ্রাম করতে করতে মা তখন ক্লান্ত।
সব অর্জন ভেসে যেতে দেখি, দুর্ভিক্ষ,লাশ, ক্ষুধা, নাৎসি প্যারেড
আমাদের ভয়ত্রস্ত করে তোলে।অনেকদিন কথা বলিনা- সবাই বোবা।
একজন ঘোড়সওয়ার এসেছিলেন, আসলে আমরা তাকে হত্যা করেছি।
সব কিছুই রূপকথার মত লাগে,কেমন রুদ্ধশ্বাস অস্থিরতা,সময় থমকে থাকে,
সেই ঘোড়সওয়ার, যিনি ছিলেন এশিয়ার সুন্দরতর যিশু।হায় যিশু !


সাবস্ক্রাইব করুন! মেইল দ্বারা নিউজ আপডেট পান