মাহবুবা আখতার এর কবিতা
মাহবুবা আখতার এর কবিতা
একটি লোকাল ট্রেন

 

নেশা বাড়ছে, নিদান ঘোর বিপন্নকাল

ভাঙ্গনের খেলা বিষম আগুন।

ছোপ ছোপ রক্তের  স্তুুপ কুণ্ডলী পাকিয়ে ওস্তাদী

কায়দায় উড়ে যায়

বিষণ্ণতার আকাশে।

 

আতঙ্কিত সময় সাজোয়া যানে প্রস্তুত রাখে ব্যারিকেড।

শূন্য জনপথ মানুষের সাথে নেই কোনো যোগাযোগ,

 আহা মানুষ দারুণ দুঃসময়!

প্রণয়ী উসবে অন্ধকারের আলখাল্লা খুলে ধর্ষিতা

 রাতের আকাশ,

সম্ভ্রমহীন রাত খুলে রাখে তাব বেসাতি।

 

মানুষ পরম্পরায় দাসানুদাস  নিশাচর দেউলিয়া,

না প্রেমিক

না বিপ্লবী

না ঈশ্বর!

একটি লোকান ট্রেন কামান গোলা বুকে চেপে ছুটে চলে হুসহুস পু-উ-উ-উ--

শকুন আর শেয়ালের মধ্যে দারুণ সুখদভাব

পো -ও-ও -ও হুুসহুস পু-উ-উ

 

মূর্খ দেহাতি যুবতী

   

 

মৃন্ময়ী বুকের কপাট খুলে ধ্রুপদী শব্দে বেঁধে রেখো কথার পাণ্ডুলিপি।

পিপাসিত শব্দরা শোভন মুদ্রায় কবিতা হবে সুখের সৈকতে।

ঠোঁটের গভীর মমতায় তোমার শরীর ভিজে যাবে আদরে, আদরের জলে,

কখনো প্রতিবাদী কখনো পলিময় উর্বর হবে দৈব আলিঙ্গনে।

সুগন্ধি সোমত্ত নদীতে ডিঙি ভাসিয়ে রাখি রোদ্দুরের অন্ধকারের বিষম ঘোরে,

বেদনার নীলগিরিতে ফাগুন-পলাশ ছুটছে অঢেল উন্মাদনায়

আলতো ছুঁয়ে দিলেই স্বপ্ন বন্দী হবে নমনীয় জীবনযাপন,

 মুক্তো প্রফুল্লতায় শীকার করে ঝিনুকের প্রসব কষ্টে।

আহা কী নিদারুণ সুখ?

 

ফেরারি বসন্তের লুকোচুরি রঙ,পাতা-ঝরা,নুরুলদীন,তিস্তার জল,মিছামিছি বর-বউ খেলা,বালুচরে ভালোবাসার বাসর বারুদের সঙ্গমে হারিয়ে যায়। আয়মন,যূথিকা,পদ্ম,মেহেরজান নিষ্প্রাণ-নিস্পৃহতায় লড়ে যায়  অনিবার্য পতনের মুখে,

মধ্যরাতে মাতাল সুগন্ধি খুঁজে ফেরারি বিছানায়।দ্রুতযান এক্সপ্রেস  হুইসেল ফেলে বিক্ষুব্ধ স্বপ্নের দুঃখবাদী শোকে।

হৃদপিণ্ডে ফুটে ওঠে আগুনের গোলাপ, অনিশ্চিত সম্ভাবনার চাবি খুলে পেতে চায় মৃন্ময়ী তোমাকে সমূহ অসুখে,কষ্টে,

কাতরতার বেনামি বসন্তে।

 

মৃন্ময়ী ঘুরে দাঁড়ায় স্বপ্নলোকের বিপরীত স্রোতে,

পাপ-পুণ্যের খতিয়ানে বিনিদ্র রাত ভেসে যায় অলীক স্বপ্নের জলে।

স্বপ্ন-কষ্টে শোকবৃক্ষ গজিয়ে বুকে সেটে রাখি তোমার একজোড়া চোখ,

তোমার চোখেই অন্তিম আহুতি গভীর প্রণয়।

কোনো দৈববাণী নেই

কোনো প্রার্থনা নেই

রেসের স্বপ্ন-কোলাহলের দোলাচালে মূর্খ দেহাতি যুবতী ঢেকিতে ধান ভানে।

সীমানা


যেখানে নেই কোনো বোধ,

নেই কোনো বোধের দায়----

নেই বুকের ভেতরে চিন্ চিন্ ব্যথা,

চোখের কোণে জমে থাকা জল।

তার জন্য কীসের অপেক্ষা?

 

 ভাবনায় রেখে শ্বাস বন্ধ হওয়ার কষ্ট নেই,

হঠা মনে পড়লে দীর্ঘশ্বাস ঝরে না।

 নেই কোনো স্বপ্নের ছায়া,নির্ঘুম ক্লান্ত রাত,

পরানের গহীনে বাজে না স্মৃতির ভায়োলিন।

তার জন্য কীসের সীমানা?

 

 যার নেই ভালোবাসার কোনো শুশ্রূষা,

 শ্রাবণ আকাশ,জল ভরা মেঘ-বাসন্তী পূর্ণিমা।

নেই ঝড়-জলের তাণ্ডব, শারদীয় শাদা মেঘ,

 

 দু'চোখ ভরে দেখার আকুতি-মন কষ্টের টানটান অনুভব!

যার নেই কোনো প্রার্থনার আবাহন---

তার জন্য কীসের মনখারাপ?

 

এখন অপেক্ষা নেই ,সীমানা নেই, নেই মনখারাপ,

সম্পর্কের সানুনয় প্রার্থনা ভসর্নায় ভেসে গেছে অপারলোকে

 ভালোবাসার বুকে গজিয়ে উঠেছে ক্যাকটাস ঝাড়।

শুধু রয়ে যায় কিছু প্রাণময় আকুতি।

 

 


সাবস্ক্রাইব করুন! মেইল দ্বারা নিউজ আপডেট পান