
মেরুদণ্ড
মেরুদণ্ড ভেঙে পড়েছে। মাথা নত হতে হতে স্পর্শ করেছে পায়ের বুড়ো আঙুল।
কান্নার জল মিশে গ্যাছে ঘোলা জলে।
উপপত্নীর তৃপ্তির ঢেকুর ও ঠে মধ্য গগনে!
তুমি যদি দেশদ্রোহী হও তোমার মুখ থেকে উপচে পড়বে রক্তাক্ত বমন।
শস্যর মধ্যে ভূত ও উৎকণ্ঠা নিয়ে হাওয়ায় উড়িয়ে দিয়েছে কর্তিত আঙুল।
ধর্মের যাতাকল খামচে ধরেছে ফিলিস্তিনি শিশুর বাঁচার স্বপ্ন।
সত্য ক্ষয় হতে হতে মর্মান্তিক পরিণতি,ঘাসও ধুলো হতে হতে মৃত্যু-আখ্যান।
নিঃসঙ্গতায় ডু বে গ্যাছে পূর্ণিমার চাঁদ, অসময়ে লোভের অঙ্গার ঝলসে দিয়েছে জীবন-কাঠামো।
মহাসড়কের সব আলো নিভে গেলে দৃশ্যময় হয়ে ওঠে শয়তানের কর্দযতা।
অকাল মুগ্ধতা ভোরের মসৃনতার সাথে নুয়ে পড়ে করুণ আশ্বাস।
খাঁচার তারতম্য বুঝতে পারার মতো বিস্তর বাহু বল তোমার নেই।
নোতুনভাবে জীবানু স্থাপিত হলে জীবনও ঝরাপাতার মতো অস্পষ্ট হতে থাকে।
শিল্প বিপ্লব সাধিত হলে ঢেঁকিও স্বর্গে গিয়ে ধান ভানে।
নব্য সাধুর আগমন ঘটায় মৎসশিকারীর হাড়ের হার্পুনে
বেজে ওঠে ত্রিকাল মগ্ন সুর!
ক্ষত
ক্ষত নয় অক্ষত হয়ে সমুখে বসো
অপরিহার্য বলে আসলে কিছু নেই
বলতে বলতে এত কথা কেউ বলে?
তুমি কী বাচাল নাকি অকালকুষ্মাণ্ড
হরিদাস পাল? নাকি রহিমের বড়
ভাই জিন্নাহ? জীবন গড়িয়ে এখন
দু'পথের দু'দিকে!ভাষা ও অভিজ্ঞান
আজ মুড়ো হতে হতে ভেঙে ভেঙে
পড়ে। যে দেশে রবিবাবুর জ্ঞানের
বহর নিয়ে আর্দশ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে
পারে সেদেশে তুমি আমি কে বলো
দেখি?যে অভিগ্রহণ জীবন দু'টুকরো
করে দেয় তার কী খুব প্রয়োজন ছিল?
আলোর রহস্য সরিয়ে মানবিকবোধের
কাছে থিতু হয়ে বসো কোনো স্তব্ধতা
নয় এ এক অপার বিস্ময় !ব্যর্থ সময়
ব্যেপে অচেনা অভিঘাত আর মর্মনাশ
সোজা হয়ে দাঁড়াও নইলে ধর্মের যাতা-
কল তোমাকে পিষে মারবে! সামান্যই
যখন অসামান্য হয়ে যায় তখন ঘাতকের
মুখাপেক্ষী কে হতে চায় বলো দেখি?
স্তিমিত আলোয় নিঃসঙ্গ পথও ক্রমশ
অদৃশ্য হয়ে যায় আর চেনা চোখও
অচেনা হয়ে ওঠে মুহূর্তেই শুধু আবছা
আলোয় যেটুকু দেখা যায় দ্বিধা ও দূরত্ব।
ঘুঘুকাহিনী
মেয়েটি ঠাণ্ডা মাথায় আগাচ্ছে! ধূর্ত এবং লোভী!সর্বগ্রাসী!
সবদিকে ওর চোখ যেন গিলে খাবে বর্তমানসহ ভবিষৎ
ঘুঘুকাহিনীর পৃষ্ঠা উ ল্টে যাচ্ছে একের পর এক... শীতার্ত
সন্ধ্যায় ভোতা মস্তিষ্কের পুরুষগণ বহুগামী নারীর ছলনায়
অন্ধ হতে হতে বধির হয়ে যায়!এ নগর কী এখন মৃত
বোধহীন মানুষের অলৌকিক ম্যাজিক? এক বিভ্রান্তিকর
গোলক ধাঁ ধাঁ চারদিক ছড়িয়ে পড়ে!এরকম সময়ে পথও
অনিরাপদ, বাড়ি ফেরা অস্বাভাবিক জটের মধ্যে স্থির হয়ে
আছে! অচেনা মানুষের ভিড়ে আতঙ্ক স্মার্ট ভঙ্গীমায় স্থ গিত
প্রত্যাখান দৌড়ে বেড়াচ্ছে অভিশাপ মাথায় নিয়ে!সর্বত্র
এত অস্থিরতা দেখা দিলে সময়ও ছোবল তুলে বসে।
এখন আর কোথাও যাবার নেই, জলে স্থলে ডুব সাঁতার
সন্দেহ আর বোধহীন মানুষের নগ্ন উল্লাস খেয়ে ফেলছে
বিবেক,অপেক্ষা, মায়া , গ্রন্থ,স্মৃতির শহর না দেখা অরণ্য
ধোঁয়া
মস্তিষ্ক কাজ না করলে হৃদয় নিবোর্ধের খপ্পরে পড়ে যায়
ওঁৎ পেতে থাকা মুণ্ডহীন ছায়ার বিস্তার ক্রমশ আব র্তিত
হতে থাকে। জীবনের যত ভুল অনুভব বিবর্ণ হতে হতে দীর্ঘ
থেকে দীর্ঘ হয়ে যায়। একদিন ধোঁয়ার কুণ্ডলী স্বাধীনতার
প্রশ্রয় পেতে চাইলে নেশাও উন্মাদ হয়ে ওঠে!কারো গাত্রদাহ
হলে প্রেমের পটভূমি হাওয়াকলের জলের মতো চুঁইয়ে পড়ে
আমি কী কাউকে কখনো ভালোবেসেছিলাম? তা আজ
আর মনে পড়ে না! শূন্যতার জলভরা কলস বৈপরীত্য নিয়ে
আসে লোভার্ত সময়ের আল বেয়ে। শীতার্ত বিকেলে মেঘের
মৌনতা তুমিহীন আলপথ প্রলম্বিত করে তোলে।
বরফের সাঁকো
দেখার কোনো শেষ নেই!আমি এখন সব কাজ ফেলে
মানুষ দেখি...এর চেয়ে বড় বায়োস্কোপ আর হয় না!
আজ এই বিস্ময়ের দিনে মানুষ শিকারীরা বড় বিস্ময়
হয়ে অগ্নিকুণ্ড জ্বেলে মূর্খ উচ্ছ্বাসে গড়িয়ে গড়িয়ে যায়!
একদা যাদের বৃহস্পতি তুঙ্গে ছিল এখন তারা দুর্নিবার
বেদনায় নীল হয়ে আছে! চারদিকে শুয়োরের আর্তনাদ
অনন্ত ঘৃণার ভেতরে মানুষের মুখোমুখি দ্বিতীয়বার থিতু
হয়ে বসবার কোনো আকাঙ্খা আমার ভেতরে এখন
আর কাজ করে না! এইসব মানুষের ভেতরে লোভ ও
সংঘর্ষ ব্যক্তিগত খেরো খাতা খুলে যোগ অংকের
হিসাব মেলায়।হায়! শীতার্ত দুপুর তুমি কেন মৌন হয়ে
আছো?ভয়াবহ এই পতনের বেদনা কত মর্মান্তিক তুমি
বোঝো?বরফের সাঁকো বেয়ে প্রেম অপ্রেমের কঠিন
অভিলাষে
যে ভাসে সে ভাসে! আজ 'আমার সমস্ত হৃদয়-ঘৃণায়-
বেদনায়-
আক্রোশে ভ'রে গিয়েছে!' সূর্যহীন এরকম
পৌষের দিনে আমি ছাড়া সবাই যে যার মতো বেরিয়ে
পড়েছে!যেন আমারই কোথাও যাবার নেই সব সর্বনাশ
পথ আগলে দাঁড়িয়ে আছে তুমুল আহ্লাদে!