ফরিদা ইয়াসমিন সুমি এর তিনটি কবিতা
ফরিদা ইয়াসমিন সুমি  এর তিনটি কবিতা

কবি : ফরিদা ইয়াসমিন সুমি


আরক


কে বলেছে প্রেমে পড়ি নি?

আছে আমারও! আরকের সন্ধান!

ভেবো না, তোমারই শুধু একচ্ছত্র আধিপত্য,

আমিও দেখেছি

কষ্টের চাইতে আনন্দটাই বেশি!

মেঘরঙা শাড়ির ভাঁজে ভাঁজে

ফিসফিস সুরে যে শিহরণ

চক্রান্তে  বাধ্য করে সমর্পণে

তা-ই তো প্রেম, নাকি?

ভীরু চোখে সাহসী-সুন্দর তৃষ্ণায়

খাজুরাহোর ভঙ্গিমায় খোদাই হবার

তীব্র আকাঙ্ক্ষাই তো প্রেম!

ঠিক তো ? নাকি?

 

অসমর্থ


গ্রহণের সাধ্যাতীত

দিও না কিছু,

কি ফুল কি কাঁটা

কি প্রেম কি স্মৃতি

কি ক্ষরণ বিস্মরণ,

সমর্থ নই পরিশোধে

বহনের অসাধ্য কিছু

নিও না চেয়ে, 

কি বিভা কি কালিমা

কি অপার কি সসীম

কি ভাস্বরতা নশ্বরতা

বাধ্য নই বিন্যাসে

 

ঠুনকো কাঁচ


 

এখনও কি ওখানে আছোওখানেই থাকো?

সেই যে বকের মতো সাদা তুলো ফুটে থাকা কার্পাসের গাছ,

পেছনে পাঁচিল-ঘেরা একতলা বাড়িটা?

বৃষ্টিতে যার টিনের চালে নৃত্যরতা নূপুর ধ্বনি!

লাগোয়া পাহাড়টিতে কি এখনও যাওয়া হয়?

বুকপকেটে কি লেগে থাকে জংলীফলের কষ?

পড়ে থাকা ছানাদের যতনে তুলে দাও নীড়ে?

বোনের আলতার শিশি ভেঙে ফেলে

কার কাছে চাইতে যাও এখন?

ব্যবহারিকের জবাফুলের জন্য কোথায় চলে যেতে!

মোমের ট্রে-তে ব্যাঙের ব্যবচ্ছেদ নিয়ে ঝগড়ার কথা মনে আছে?

বর্ষায় ছাতা হারাতে বলে মনে মনে খুশিই হতাম

এখন তুমি কার সাথে ছাতায় হাঁটো?

বেত-পাতার বাঁশিতে সুর তোলার কায়দা

শেখানোর ছলে বিনিময় হতো ঠোঁটের ছোঁয়া

ফোমের ঘর,যত্নআত্তি সত্ত্বেও বেড়ালছানাটি

মরে যাওয়ায় সে কী কান্না তোমার!

ধুম করে চুল কেটে ফেলেছিলাম বলে অভিমানে

কথাই বলো নি ক'দিন!

অধিকার আরোপে শিহরিত হয়ে

চুলগুলো শুধু বেড়েই চলেছে সেই থেকে !

বইয়ের ভাঁজে কাঠগোলাপের পাপড়িগুলো

আজও আছে নিষ্প্রাণ সুরভি বুকে নিয়ে!

ভাঙা চুড়ির টুকরো কুড়োতে পেরিয়ে যেত

কত সকাল, দুপুর, বিকেল,

প্রান্তগুলো আগুনে জুড়ে বানাতাম রঙিন শিকল

খেলার ছলে শেকলে বেঁধেছিলে একদিন

মুক্ত হতে চাই নি বলে সরে যাই নি

তবু ভেঙে গিয়েছিল ঠুনকো কাঁচের বলে!

 

 

 

 


সাবস্ক্রাইব করুন! মেইল দ্বারা নিউজ আপডেট পান