রজব বকশী এর কবিতাগুচ্ছ
রজব বকশী এর কবিতাগুচ্ছ

মুদ্রা

সেই পুরনো দরজা দিয়ে
আসি,যাই
খারাপ লাগে না
বরং উৎসাহ পাই

আমাকে আয়না দিয়ে দেখে
ঘরের ভেতর
এবং বাইরের শত্রুমিত্র

ঘামরক্তের ভেতর ঘেকে উঠে আসে
অজস্র মুদ্রার মত স্বপ্নমনোহর

ভালোবাসার দরজা দিবারাত্রি খোলা

এই সময়ের ঢেউ

ইদানিং জানি না শব্দটি খুব প্রিয় হয়ে উঠছে
সারাক্ষণ অজ্ঞতার মধ্যে ডুবে যাচ্ছি
কূলকিনারাবিহীন
ভেসে বেড়াচ্ছি কোথাও
উড়ছি দ্বিধার রৌদ্রমেঘে ডানা মেলে বহুদূর

আর একটা নির্জনভূমি ডেকে যাচ্ছে
সেই সৌন্দর্যলীলার থেকে দৃষ্টি ফেরানো যায় না
নীরবতার ভেতর হাবুডুবু খাই

জানি না শব্দটি প্রিয় রমনীর মত ছুঁয়ে যায়
নিজেকে গভীরভাবে অনুভব করি

ভালো থেকো

শীত তোমাকে গভীর আলিঙ্গন করে
আমাদের কাছ থেকে কেড়ে নিয়ে গেছে

ঝরে যাওয়া পাতার বোবাকান্না পাথরের ঢেউ
দীর্ঘশ্বাসগুলো শঙ্খচিল হয়ে উড়ে

মধ্য হেমন্তে হঠাৎ বৃষ্টি দমকা হাওয়া শিরশির করে
এবুকে আছড়ে পড়ে

এখনো তোমাকে স্বপ্ন দেখি
রাত পোহালে ভোরের ঘাসবনে শিশিরের কেউ

বাবা, তোমাকে অনেক মনে পড়ে, যেখানেই থাকো
ভালো থেকো বাবা খুব ভালো থেকো

শিরোনামহীন

০১.
মাটির সাথে মাটি মিশে যায়
জলের সাথে জল

জল মাটির আশ্চর্য রসায়নে তৈরি
অবয়বের কাহিনি পুস্তকে অন্তরে

জল মাটির চৈতন্য ঢেউ
সব সময় হৃদয়তীরে
নোঙর করে না

০২.
রাগের সাথে আগুন আলিঙ্গন করে
দমের সাথে হাওয়ার
গলায় গলায় ভাব

অথচ দরদী শত্রু হয়ে ওঠে

আগুন হাওয়ায় স্বপ্ন ফুটে ঝরে
এই মনের গহীনে কান পেতে শোন
প্রেম বিরহের গান

০৩.
এত আদর মমতা প্রণয় চুম্বন
তবু শূন্যতার ফেউ

এই চিঠি ইনবক্সে পোস্ট করে দাও

আমার একটা ঘর আছে
সব সময় খোলা থাকে না
ভালো মন্দের আবহ বুঝতে শেখায়

আর সেই ঘরের দরজা খুলে যাতায়াত করে
পরিবারের সবাই শুধু নয়
আত্মীয় অনাত্মীয় বহিরাগতরাও

এইসব দেখে শুনে ঋদ্ধ হতে হতে
জানালায় উঁকি দেয়
অতলান্ত ভাবনার অন্তহীন ঢেউ

গাছ পাথর আয়না হয়ে জেগে ওঠে
অথচ মানুষ খুব একটা বুঝি না!
ফুল ভ্রমর সম্পর্কে দ্বিধার পাহাড় ধ্বসে পড়ে

যখন সমুদ্রতীরে থমকে দাঁড়াই
জীবনের ডায়েরিতে ধূলিমেঘ পাখি হয়ে উড়ে
ভ্রমণে ইবনে বতুতার ছায়া হয়ে উঠি

এই আমি এবং আত্মা কাছে থেকেও অনেক দূরে
ঘর আমাকে পথের ক্লান্তি মুছে দেয়
পথ আমাকে ঘরের মায়ায় জড়ায়

আমি আসলে ঘরের না পথের কেউ
সময় জবাব দাও


সাবস্ক্রাইব করুন! মেইল দ্বারা নিউজ আপডেট পান