রোখশানা রফিক এর তিনটি কবিতা
রোখশানা রফিক এর তিনটি কবিতা

মনমুনিয়া


শিমুলের তুলার লাহান

উড়ে পরানডা আমার,

আচানক ঘুম ভাইঙ্গা

নিশিরাইতের ধলা

চান্নি-পসরে।

মুন চায় বেবাক ফালাইয়া

হই বিবাগী দ্যাশান্তরী।

ঘর ফালাইয়া মুন আমার

পাগলা ঘুড়া, ছুটে টগবগ

টগবগ ভিনদেশী গেরামের

লাউয়ের মাচার দিহে।

 

ধইঞ্চার বেড়ার আড়ালে

তর কইতরী মন,

ধড়ফড় করে য্যান

টিয়াপাখির লাহান।

হেই পাখি পুষ মানে না

আমার মুনের খাঁচাত,

খালি ছডফড ছডফড

উইড়্যা যাবার চায়,

আসমানের ঝগমগ

তারার দ্যাশে।

 

মনমুনিয়ারে,

তুই বাঁধলি না বাসা

পরাণে আমার।

খালি ধড়ফড় ছডফড করস

কুন সেই পনথের উফর

ফকফকা নীল আসমানে

ডানা মেইল্যা উড়াল

দিবার লাগি।


বিষ


গোক্ষুর সাপের ফনায়

যেই বিষ ঢালে,

সেই বিষ ঢালো তুমি

অন্তরে আমার।

দিন নাই, রাইত নাই,

বেবাক আন্ধার।

 

 

আসমান এই হাসে ঝকমকা

চান্দের আলোয়, জমিন

কান্দে ঝিরিঝিরি

বিষ্টির ফুডায়।

বিহান কুন সুময়

গড়ায় হাইনঝার আন্ধারে,

মুন লাগে না আমার

ঘরে-দুয়ারে।

চক্ষের উফর খালি ভাসে

অতি সোন্দর সোনার

বদন তুমার।

 

 

হেই দুষ্কে জ্বইলা মরি

ইডের ভাটাত যেমুন মাটি।

বন্ধে, তুমি রইলা কুনখানে,

আর আমি বা কুনায়?

তবুও পরাণ বাইন্ধা রাখি

আশায় আশায়,

ঈদের চান্দের লাহান

যুদি খালি একবার

দেহা যায় তুমায়।


জলদস্যু


জলদস্যু তুমি এক

লুটি নেও মন,

জলের টানেতে পরি

মনেতে ভাঙ্গন।

উদাসী পৌষালী চাঁদ

শিথানে মাস্তুলে,

জানি না হইলা পর

কুন সে ভুলে?

 

উজান গাঙ্গের পানে

জোর বৈঠা বাও,

দূর গাঁয়ে ভিড়ে

তুমার সপ্তডিঙ্গা নাও।

লুটিলা মানিক রতন

মনের সিন্দুক,

তুমা বিনে শূণ্য মনে

জরজর বুক।

 

মনখানি নিলা কাড়ি,

নিলা না আমারে,

আন্ধারে জাগি একা

অকূল পাথারে।


সাবস্ক্রাইব করুন! মেইল দ্বারা নিউজ আপডেট পান