একদিন রেলগাড়িতে
................................
বসে আছি ঝিঁকঝিঁক শব্দের ভেতর
যেন রেলগাড়িকে পিছনে ফেলে
হেঁটে যাচ্ছে ঘরবাড়ি গাছপালা ফসলের মাঠ।
যেন গোল্লাছুট খেলছে সারিসারি বস্তির ছুঁপড়ি ঘরেরা।
ভেতরে চেয়ে চেয়ে দেখি বাহারি মানুষের ঢেউ। ঢেউগুলো ছোটবড়, কিছু রোদে ঝলমল।
পারাপারের পাশ না থাকায়
এখানে সেখানে কিছুটা ভয়।
তার পিঠ ঘেঁষে হকারের হাকডাক।
সর্বরোগের ওষুদের এনালগ গুণকীর্তন।
পত্রিকার ভাঁজে এসব দূশ্য রেখে জলচোখে
একদিকে চেয়ে আছে বেনামি তরুণী।
একপাশে নববধূটির চোখে বাবা বাড়ির দুরন্তপনা।
বৃদ্ধ রোগিটি রাজ্যের অসহায়ত্ব নিয়ে পৃথিবীকে বলছে
দূর হও, ভাগো-- আমি আরেকটু জিরিয়ে নেবো জীবনবৃক্ষের ছায়ায়।
তবু কথা শুনছেনা সুনামি ঝড়।
উল্টোপিঠে কেউ কেউ জীবন বেচার জন্য মরিয়া...
এসব বুঝে উঠতেই বেরসিক টিটি তার গাঁয়ে থাকা
সাদা পোষাকের মর্ম রেখে
বেকারের স্বপ্নে ঘাঁই মেরে নিয়ে নিল টাকার এনার্জি।
পাশে বসে জলের গান গাইছে রাজন্য রুহানি
'আমি একটা পাতার ছবি আঁকি
পাতাটা গাছ হয়ে যায়...
রেলগাড়ি ছুটছে হুইসেল বাজিয়ে।
ভালবাসার ঘর
......................
ধান মাড়াইয়ের পর
খড়টুকু আমাকে দিও ?
সেই খড়ে ভালবাসার ঘর বানাবো
মুদিখানা থেকে সুতলি এনেছি রেখে
কামারশালার সুঁচালো সুঁই,
কামলা আনতে খবর দিয়েছি কিছুক্ষণ আগে
ছনের ঘর ছাউনির সব আয়োজন।
ও বাড়ীর চাচা বলছে, খড়, সুতলি,কামলা কেন হে বাপু
আমি বললাম, রওনা দিয়েছে
এসে পড়লো বলে
আমার ও ।
নাছোড়বান্দা মানুষটি ফের প্রশ্ন ও কে?
লজ্জায় লাল চোখেমুখে মৃদু সুরে বললাম,
আমার ভালবাসার মানুষ।
বুকের মধ্যখানে ছনের ঘর তৈরীর
আয়োজন চলছে মহাসমারোহে
চারপাশে সীমানা নির্ধারনে
ফিতে ধরতেই প্রতিবাদে
কৈ মাছের মতো ফাল দিয়ে উঠলো
আবেগী মন
আজকাল বড়ই ইমোশনাল হয়ে উঠছে প্রায়
উত্তাল কন্ঠে বলছে
ভালবাসায় দাঁড়ি,কমা,সেমিকোলন বা সীমানা
কিছুই মানবোনা আমি
শরীরের অঙ্গ প্রতঙ্গ ভালবাসার ঘর নির্মানে
মহাজজ্ঞে মত্ত
যে ঘরে থাকবে ওদের কুটুম্ব
আমার ভালবাসার মানুষ
ধুকপুক ধুকপুক ধুকপুক করে
বুকের জমিনে সিগন্যাল দেয়
হার্টবিট নামের ঐ হারামজাদা
ও বেটাকে বলেছি,
তোর ধাক্কায় আমার প্রিয়ার
ঘুম যাবে ভেঙ্গে
বহুকাল এ কাজ করলে,
এবার ক্ষ্যান্ত হ,
ময়না নিয়ে ভালই ভালই বিদেয় হও।
আমরা দুজনে বেঁচে থাকবো
ভালবাসার নিঃশ্বাসে।