অরুন্ধতী রায় ও ‘দ্য মিনিস্ট্রি অব আটমোস্ট হ্যাপিনেস’
অরুন্ধতী রায় ও ‘দ্য মিনিস্ট্রি অব আটমোস্ট হ্যাপিনেস’

ছবি : নেট


তাঁর প্রথম উপন্যাস দ্য গড অব স্মল থিংস প্রকাশিত হওয়ার পর ২০ বছর কেটে গেছে। অরুন্ধতী জানিয়েছিলেন, তিনি আর ‘ফিকশন’ লিখবেন না, যা বলার এক বইতে বলে ফেলেছেন। সেই বইটি ছিল একটি নিষিদ্ধ প্রেমের অপূর্ব মন্থন। অভাবিত কাব্যময় ভাষায় একটি পারিবারিক ট্র্যাজেডির সংগোপন প্রকাশ। পরবর্তী ২০ বছর অরুন্ধতী যে নীরব ছিলেন, তা নয়। এই সময় সাহিত্য ছেড়ে তিনি বেছে নেন ‘প্রতিবাদ রাজনীতি’, জড়িয়ে পড়েন ভারত সরকারের নিগ্রহ নীতির বিরোধিতায়। যুক্ত হন মাওবাদীদের সঙ্গে। ভূমিহীন-দলিতদের সঙ্গে। এমনকি ভারতীয় সামরিক বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধরত কাশ্মীরি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের পক্ষেও কথা বলেছেন তিনি। ভারতের পরিবেশবাদী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে একদিকে সরকার, অন্যদিকে বৃহৎ পুঁজির কোপানলে পড়েন অরুন্ধতী। ইরাক যুদ্ধ এবং বিশ্বজুড়ে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধেও তিনি হয়ে ওঠেন এক প্রধান সমালোচক। ইরাক যুদ্ধ শুরুর আগে নিউইয়র্কের কুপার ইউনিয়নে তাঁকে দেখেছি কয়েক হাজার মানুষের সামনে ওই যুদ্ধের সাম্রাজ্যবাদী ও নয়া উপনিবেশবাদী চরিত্র তুলে ধরতে।

অন্য কথায়, অরুন্ধতী কথাসাহিত্যিক থেকে পরিণত হলেন ‘এজেন্ট প্রভোকেটিওর’-এ। দ্য মিনিস্ট্রি অব আটমোস্ট হ্যাপিনেস-এর পাঠ শেষে আলাপচারিতা শুরু হতেই প্রশ্ন ছুড়ে দেওয়া হলো তাঁকে, সাহিত্যিক যখন রাজনীতিক হয়ে ওঠেন, তা কি সাহিত্যের জন্য দুঃসংবাদ নয়? হেসে উঠলেন অরুন্ধতী, ‘লেখক যদি তাঁর সমাজ নিয়ে না লেখেন—যে সমাজ অসাম্য, বিভক্তি ও নিবর্তনে জর্জরিত—তাহলে অন্য আর কী নিয়ে তিনি লিখবেন? আর এর নাম যদি রাজনীতি হয়, তাহলে তাতে আমার কোনো আপত্তি নেই।’ আরেকজন প্রশ্ন করলেন, ‘কেউ কেউ বলে, আপনি বড় নাটুকে, বড্ড হিস্টেরিক্যাল (আবেগপ্রবণ)।’ এবার হাত দুটো ঊর্ধ্বে ছুড়ে অরুন্ধতী বললেন, ‘এখানে এমন কোনো নারী আছেন কি যাঁকে কখনো না কখনো এই সব অভিযোগ শুনতে হয়নি?’ সারা অপেরা হাউসের দর্শকেরা সোল্লাসে সমর্থন জানাল তাঁকে।


সাবস্ক্রাইব করুন! মেইল দ্বারা নিউজ আপডেট পান