উন্নত চিকিৎসার অপেক্ষায় আছেন আমার মোক্তারখ্যাত আলাউদ্দিন আলী
উন্নত চিকিৎসার অপেক্ষায় আছেন আমার মোক্তারখ্যাত আলাউদ্দিন আলী

ছবি : নেট থেকে


অনেকদিন ধরেই ফুসফুস ক্যান্সারসহ বার্ধক্যজনিত নানা অসুখে ভুগছেন দেশের বর্ষীয়ান সুরকার ও সংগীত পরিচালক আলাউদ্দিন আলী। মাঝে খানিকটা সুস্থ হয়েছিলেন। নতুন বছরের শুরুতে ফেসবুকে ঘোষণা দিয়েছিলেন নিয়মিত আবার গান করবেন তিনি।

সবাই যখন এই কিংবদন্তির নতুন শুরু নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছিলেন এমনই সময় এলো মন খারাপের খবর। গুরুতর অসুস্থ হয়ে ২২ জানুয়ারি রাজধানীর মহাখালীর আয়েশা মেমোরিয়াল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ছিলেন লাইফ সাপোর্টে।

আলাউদ্দিন আলীর চিকিৎসার জন্য ২৫ লাখ টাকা অনুদানও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ৩ ফেব্রুয়ারি দুপুর ১২টার দিকে গণভবনে ডেকে আলাউদ্দিন আলীর স্ত্রী ফারজানা মিমির হাতে ২৫ লাখ টাকার সঞ্চয়ী পত্র তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সুচিকিৎসায় ভক্ত-প্রিয়জনদের দোয়ায় এখন সুস্থতার পথে এই কিংবদন্তি সুরস্রষ্টা। রয়েছেন নিজ বাড়িতেই। সোমবার আলাউদ্দিন আলীর শারিরীক অবস্থার বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হয় স্ত্রী ফারজানা মিমির সঙ্গে। তিনি জানান, আগের চেয়ে আলাউদ্দিন আলীর শারীরিক অবস্থা অনেকটাই ভালো এখন।

তিনি বলেন, ‘সবার দোয়ায় নাড়াচাড়া করতে পারছেন তিনি (আলাউদ্দিন আলী)। হাত-পা নাড়াতে পারেন, কথাও বলতে পারেন। তবে তার কথা এখনো অস্পষ্ট, পুরোপুরি ক্লিয়ার নয়। বর্তমানে তার ফিজিওথেরাপি চলছে। আমরা তার উন্নতি চিকিৎসার জন্য সব ব্যবস্থা সম্পূর্ণ করে রেখেছি। কিন্তু এখনো যে অবস্থা তাকে দেশের বাইরে নেয়া যাবে না। তাই আরো একটু ভালো অবস্থার জন্য অপেক্ষা করছি।’

মিমি জানান, শারীরিক অবস্থা আরও স্বাভাবিক হলে সাভার অথবা মিরপুরে অবস্থিত সিআরপি হাসপাতালে নেয়া হবে। সব মিলিয়ে আরো এক মাসের মতো সময় লাগবে। তারপর চিকিৎসকদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী উন্নত চিকিৎসার জন্য ব্যাংকক নেয়া হবে।

প্রসঙ্গত, আলাউদ্দিন আলী ১৯৫২ সালের ২৪ ডিসেম্বর মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ি থানার বাঁশবাড়ী গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত সাংস্কৃতিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। আলাউদ্দিন তার পিতা ওস্তাদ জাবেদ আলী ও ছোট চাচা সাদেক আলীর কাছে প্রথম সঙ্গীতে শিক্ষা নেন। ১৯৬৮ সালে তিনি যন্ত্রশিল্পী হিসেবে চলচ্চিত্র জগতে আসেন এবং আলতাফ মাহমুদের সহযোগী হিসেবে যোগ দেন।

এরপর তিনি প্রখ্যাত সুরকার আনোয়ার পারভেজসহ বিভিন্ন সুরকারের সহযোগী হিসেবে কাজ করেন। আলাউদ্দিন আলী ১৯৭৫ সালে সঙ্গীত পরিচালনা করে বেশ প্রশংসিত হন। তিনি 'গোলাপী এখন ট্রেনে' ছবির জন্য ১৯৭৯ সালে প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।

তার সুর করা গানের মধ্যে উল্লেখযোগ্যা একবার যদি কেউ ভালোবাসতো, যে ছিল দৃষ্টির সীমানায়, প্রথম বাংলাদেশ আমার শেষ বাংলাদেশ, ভালোবাসা যতো বড় জীবন তত বড় নয়, দুঃখ ভালোবেসে প্রেমের খেলা খেলতে হয়, হয় যদি বদনাম হোক আরো, আছেন আমার মোক্তার, আছেন আমার ব্যারিস্টার ইত্যাদি কালজয়ী সব গান।


সাবস্ক্রাইব করুন! মেইল দ্বারা নিউজ আপডেট পান