এবার ‘ফজলুল হক স্মৃতি পুরস্কার’ পাচ্ছেন ফারুকী ও লোদী
এবার ‘ফজলুল হক স্মৃতি পুরস্কার’ পাচ্ছেন ফারুকী ও লোদী

সাহিত্য বার্তা : বাংলাদেশের চলচ্চিত্র সাংবাদিকতার পথিকৃৎ ও প্রথম চলচ্চিত্র বিষয়ক পত্রিকা ‘সিনেমা’র সম্পাদক এবং বাংলাদেশের প্রথম শিশুতোষ চলচ্চিত্র ‘প্রেসিডেন্ট’ এর পরিচালক ফজলুল হক-এর মৃত্যুবার্ষিকী ২৬ অক্টোবর। ফজলুল হকের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ‘ফজলুল হক স্মৃতি কমিটি’ ২০০৪ সাল থেকে এই দিনে ‘ফজলুল হক স্মৃতি পুরস্কার’ দিয়ে আসছে। বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক রাবেয়া খাতুন এ, পুরস্কার প্রর্বতন করেন।

চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে এ বছর এ পুরস্কার পাচ্ছেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী এবং চলচ্চিত্র সাংবাদিকতায় শফিউজ্জামান খান লোদী। ২৬ অক্টোবর ফজলুল হক-এর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে প্রতি বছরই এক অনাম্বড়র অনুষ্ঠানে মাধ্যমে এ পুরস্কার দেয়া হয়। এ বছর অনিবার্য কারণবশত ২৬ অক্টোবর পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। পরবর্তিতে ‘ফজলুল হক স্মৃতি কমিটি’ তারিখ ঘোষণার মাধ্যমে পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানটির আয়োজন করবে।

ফজলুল হক জন্মগ্রহণ করেন ১৯৩০ সালের ২৬ মে বগুড়ার এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে। ১৯৯০ সালের ২৬ অক্টোবর ফজলুল হক মৃত্যুবরণ করেন। ফজলুল হক ছিলেন এ দেশের প্রথম সিনেমা বিষয়ক পত্রিকা ‘সিনেমা’র সম্পাদক ও প্রকাশক। ১৯৫০ সালে বগুড়া থেকে সিনেমা পত্রিকাটি প্রথম প্রকাশিত হয়। পরবর্তী সময়ে প্রকাশনা ঢাকায় স্থানান্তর হয়। পত্রিকাটি প্রকাশিত হতো ২, এসি রায় রোড ঢাকা থেকে। পত্রিকাটির সর্বশেষ সংখ্যা প্রকাশিত হয়েছে ১৯৫৯ সালে। তৎকালীন সময়ের অত্যন্ত মানসম্পন্ন ও জনপ্রিয় পত্রিকা ছিল ‘সিনেমা’ পত্রিকা।

ষাটের দশকের শুরুতে ফজলুল হক ‘প্রেসিডেন্ট’ নামে একটি শিশুতোষ সিনেমা তৈরি করেছিলেন যা পাকিস্তান আমলে পুরস্কৃতও হয়েছিল। ‘প্রেসিডেন্ট’ ছবিতে শিশুনায়কের ভূমিকায় অভিনয় করে পুরস্কৃত হয়েছিলেন শিশুসাহিত্যিক ফরিদুর রেজা সাগর। ‘প্রেসিডেন্ট’ ছবিটি যখন নির্মিত হয় তখন ঢাকায় প্রযোজিত সিনেমার সংখ্যা মাত্র কয়েকটি।

পরে তিনি ‘উত্তরণ’ নামে আরো একটি সিনেমা পরিচালনা করেন। পত্রিকা সম্পাদনা বা চলচ্চিত্র পরিচালনা কোনোটাতেই তিনি থেমে থাকেননি। পরে অন্যান্য ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন। এদেশের চলচ্চিত্র সাংবাদিকতা ও চলচ্চিত্র নির্মাণের একেবারে সূচনা পর্বে ফজলুল হকের অবদান স্মরণীয়। তাঁর অবদানকে চিরস্মরণীয় করে রাখার জন্য ‘ফজলুল হক স্মৃতি কমিটি’ প্রতি বছর একজন চলচ্চিত্র সাংবাদিক ও সেরা চলচ্চিত্রের পরিচালককে পুরস্কৃত করে আসছে।

২০০৪ থেকে প্রবর্তিত এই পুরস্কার ইতিমধ্যে পেয়েছে- ফজল শাহাবুদ্দীন ও আহমদ জামান চৌধুরী (২০০৪), চাষী নজরুল ইসলাম ও হুমায়ূন আহমেদ (২০০৫), সাইদুল আনাম টুটুল ও রফিকুজ্জামান (২০০৬), সুভাষ দত্ত ও হীরেন দে (২০০৭), আবদুর রহমান ও গোলাম রাব্বানী বিপ্লব (২০০৮) সৈয়দ শামসুল হক ও আমজাদ হোসেন (২০০৯), চিন্ময় মৃৎসুদ্দী ও মোরশেদুল ইসলাম (২০১০), ই আর খান ও অনুপম হায়াৎ (২০১১), নাসিরউদ্দিন ইউসুফ ও গোলাম সারওয়ার (২০১২), নায়করাজ রাজ্জাক ও রেজানুর রহমান (২০১৩), সৈয়দ সালাহউদ্দীন জাকী ও আরেফিন বাদল (২০১৪), মাসুদ পারভেজ ও শহীদুল হক খান (২০১৫), আজিজুর রহমান ও মোস্তফা জব্বার (২০১৬), আবদুল লতিফ বাচ্চু ও নরেশ ভূঁইয়া (২০১৭)।

উল্লেখ্য, বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক রাবেয়া খাতুন ফজলুল হকের সহধর্মিণী। জ্যেষ্ঠপুত্র ফরিদুর রেজা সাগর বিশিষ্ট শিশু সাহিত্যিক ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব এবং চ্যানেল আই’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ছোট ছেলে ফরহাদুর রেজা প্রবাল বাংলাদেশ টেলিভিশনের এক সময়ের জনপ্রিয় উপস্থাপক ও বর্তমানে অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী স্থপতি, বড় মেয়ে কেকা ফেরদৌসী বিশিষ্ট রন্ধনবিদ ও ছোট মেয়ে ফারহানা মাহমুদ কাকলী একজন সুগৃহিনী।


সাবস্ক্রাইব করুন! মেইল দ্বারা নিউজ আপডেট পান