চূর্ণকবিতা - শামীম আজাদ
চূর্ণকবিতা - শামীম আজাদ

কবি : শামীম আজাদ

শামীম আজাদ, কবি ও লেখক, বর্তমানে যুক্তরাজ্য প্রবাসী। কিন্তু দীর্ঘ বিলেতবাসেও যে মানুষ কখনো হতে পারেননি প্রবাসী, তিনি অনাবাসী কবি শামীম আজাদ, একদার সাংবাদিক ও শিক্ষক।

সত্তর ও আশি দশকের ঢাকায় শিল্প-সাহিত্য-সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে তার ছিল উজ্জ্বল উপস্থিতি।

তার কবিতায় বাংলাদেশের প্রকৃতির ভাষিক রূপ ফুটে উঠেছে। চিরায়ত বাংলার শ্বাশত রূপ তিনি আধুনিক বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে তুলে ধরেন। নারীর ব্যক্তিত্ব, স্বাধীনতা ও ক্ষমতায়নের দিকগুলো গভীরভাবে অনুভূত হয় তার গদ্য ও পদ্যে। মুক্তিযুদ্ধ তার জীবন ও চেতনাকে গভীর ভাবে ঘিরে রেখেছে। লেখালেখি ছাড়াও নানা তৎপরতার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও ইতিহাস তুলে ধরছেন তিনি।

বর্তমানে লন্ডনে বসবাস করছেন শামীম আজাদ। তিনি জন্মগ্রহণ করেন ১১ নভেম্বর ১৯৫২ সালে পিতার কর্মস্থল ময়মনসিংহ শহরে।  তার পৈত্রিক নিবাস সিলেটে। ১৯৬৭ সালে জামালপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে তিনি মাধ্যমিক পরীক্ষা দেন। এরপর ১৯৭৯ সালে কুমুদিনী সরকারি মহিলা কলেজ থেকে তিনি ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা দেন। এরপর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ১৯৭২ সালে অনার্স ডিগ্রি অর্জন করেন এবং ১৯৭৩ সালে অর্জন করেন মাস্টার্স ডিগ্রি।

শিক্ষাজীবন থেকেই তিনি কবিতা ও শিল্প-সাহিত্যের নানা অঙ্গনে কাজ করেছেন। ফ্যাশন ও লাইফ স্টাইল বিষয়ক সাংবাদিকতার ক্ষেত্রেও তিনি সুনাম অর্জন করেন। প্রিন্ট ছাড়াও তখনকার ইলেকট্রনিক মিডিয়া বা রেডিও, টিভিতেও কাজ করেছেন তিনি। বাংলাদেশের মতোই তিনি তার বহুমুখী কাজের ধারা প্রবাস জীবনেও অব্যাহত রাখেন।

১৯৯০ সালে শামীম আজাদ লন্ডনে যান। কিন্তু বাংলাদেশের মাটি, মানুষ ও প্রকৃতির সঙ্গে তার অবিচ্ছেদ্য ও অটুট সম্পর্ক এখনো বজায় রয়েছে।


১.

স্মৃতি যেন এক গরম গালিব

পান করলেই গুন গুনানিতে

নির্জীব ন্যাতা থেকে হয়ে যাই

চনমনে, সুন্দর সজীব ।।

 

২.

স্বপ্নে দেখলাম

কিশোরী কইন্যা মাকে, অত্যন্ত উজ্জ্বল

কি আশ্চর্য্য, আমাদের ভাইবোনদের

ছাড়াই সুখী তিনি, হাসছেন খলখল।।

 

৩.

ধ্যানে উপগত হয়ে

দেখতে চাইছিলাম আমার যুবক পিতৃদেবকে

মাথায় টোকা দিয়ে পুত্র এসে বলে,

ডাকছো মা আমাকে ?

 

৪.

যে বাড়িগুলো ছেড়ে এসেছি

তার সব ঠিক মনে আছে-

বৈঠকখানা, বাগান এমনকি রান্নাঘরটা

শুধু ভুলে গেছি প্রথম বাড়ি,

মায়ের জরায়ূর ভেতরটা।।

 

৫.

আছো তো দেখি সব খানে

মিটিংএ মন্ত্রনায়

আড্ডা আলোচনায়

শুধু নেই এই খানে

আমার বুকে,

কোনো শুশ্রুষায়।।

 

৬.

যেই না সাঙ্গ করলাম

আমাদের যৌথ চলার-

ঝাঁপিয়ে, তোমার ইচ্ছে এলো

কত কিছু বলার।।

 

৭.

প্রস্থান করেছিলে, যেন ছিলেই না কোনোদিন,

ফিরে এসে প্রবেশিলে, যেন আছো চিরদিন।।

 

৮.

মৌমাছি পান করে নির্বাচিত ফুলের মৌ- মধুরতা

মানুষ পান করে নির্বাচিত মানুষের বেদনা - দুর্বলতা।।


সাবস্ক্রাইব করুন! মেইল দ্বারা নিউজ আপডেট পান