দীপঙ্কর ইমন ।। ৫টি কবিতা
দীপঙ্কর ইমন ।। ৫টি কবিতা
টংঘর

তুমি এখন যাও তবে

আমার টং ঘরে এখন অপ্রাকৃত ব্যস্ততা

 

কুয়াশায় ভিজে ভিজেও

শেষ হতে চাচ্ছে না এক গাদা স্বপ্নের হিসেব

লাল চা,

যেন আমরই প্রতিবেশী ভাইয়ের রক্ত

সিগারেট,

আর পুড়ে খাবে কতটা

প্রেমিকার ছোবল খাওয়া এই আমাকে?

 

কুয়াশাও পরেও রোদ উঠে

চায়ের কাপে লেগে থাকা রক্তের রঙ ধুয়ে নিবো

প্রেমিকার বিষ ঝেড়ে নিবো নিজে নিজেই

 

বুকের ভিতর এখনও একটা আস্ত সমুদ্র আছে

তার উপকূলেই,

আমার প্রেম আর প্রতিশোধের টংঘর

 

তুমি চলে যাও

এই টংঘর কেবল আমার,

একার

চুমুগুচ্ছ

 

একটি চুমু

এঁকে দিয়েছো বুকে

তারপর সব এলোমেলো

তোমার চুমুতে মাদক আছে

তাই তো নেশায় মাতাল

ঘোর অন্ধকারেও দ্রোহের মাতলামি

চুমু ছাড়া প্রেমিক হওয়া যায় না

ঝড়ের এক একটি রাতের পরেও

আশায় বুক বাধে মধ্যবিত্ত সকাল

চুমু এক আশ্চর্য সীলমোহর

মুহূর্তেই বুঝে যাই

তুমি বেধে রেখেছো আমায় আষ্টেপৃষ্ঠে

মৃত্যু নয়,

জন্ম হয় চুমুতে

আলোর জন্ম তোমার চুমুতেই প্রিয়তমা

 

সিগারেট অথবা জ্যোৎস্না

 

তখনও সিগারেটের শেষ টান টা বাকি

হাতে কাছে নেমে আসছে যুবতী চাঁদ

ভুল বানানে আমি লিখছি তার স্তনের ইতিহাস

 

আর একটি টান দিলেই

আমি তার সাদা বুকের ভিতর ঢুকে যেতে পারি

বলে বলুক লোকে মন্দ ,

আমি খেয়ে নিবো তার সবটুকু কামুক জ্যোৎস্না

কথিত জাত পাতের বলাই উবে যাবে তখন

 

সিগারেট অথবা জ্যোৎস্না,

আর সব হা ভাতে কবিদের মতো

আমাকেও কামুক করে তুলে

 

আর তার পর লিখে যাই

যুবতী চাঁদ এবং তার স্তনের ভিতরকার ইতিহাস

মধ্যবিত্তের স্বপ্নের মতো ,

তুলোয় লাগবার আগে অপেক্ষার শেষ টানের কথা

 

একটি বোবা কাঠপেন্সিল

আমাকে আজন্ম সঙ্গ দিয়ে গেল

সভ্যতাগুচ্ছ

 

আদিম গুহা থেকে গন্ধ ভেসে আসছে

আমার বেড রুমে

মাঝখানে সিন্ধু, হরপ্পা

সভ্যতা সভ্যতা খেলা !

 

আমি এখনও আদিম মানুষ

কেবল পশুর কাচা মাংস ছেড়ে

মানুষের দিকে ঝুঁকে যাচ্ছি

 

গুহার ভেতর ফেলে আসা সুখটুকু

ঘরের ভিতর খুঁজে চলছি

অনবরত

 

একেই কি বলে সভ্যতা?

আমরা কি উলঙ্গ নই?

গাছের পাতা, ছাল বাকল গুলোও

এখন আর গায়ে নেই আমাদের

 

আমরা সভ্যতার নামে

ঢুকে যাচ্ছি অসভ্যতার গভীরে

পুড়ে যায় নিনাদের পাহাড়

 

দু আঙুলের ফাঁকে পুড়ে যাচ্ছে সিগারেটের শরীর

খালি চোখে দেখলে তাই মনে হয়

অথচ,

আমার বুক পকেটে জমে থাকা নিনাদের পাহাড়

পুড়ে যাচ্ছে এক একটি চুম্বনে

তা দেখবার মতো চোখ,

আমি একটিও দেখিনি

আমার কোনো প্রেয়সীর ভ্রু' নিচে

 

সস্তার অন্ধকারের চাষ এখন উচ্চ ফলনশীল

ভোক্তাও অন্ধকার কিনে খাচ্ছে জলের দামে

আমার বুকে জমে যাচ্ছে

সেইসব আলো নিভে যাওয়া,

অন্ধকারের হিংস্র চিৎকার

 

আমি তখন প্রেয়সীর ঠোঁট ভুলে,

কেবল সিগারেটে মজে উঠি

 

একটু একটু করে অন্ধকার পোড়াই

মৃতপ্রায় আমাকে,

একটু একটু করে বাঁচিয়ে তুলি

 

একটু একটু করে স্বপ্ন কে বাঁচিয়ে রাখি,

মধ্যমা আর তর্জনীর ভাঁজে


সাবস্ক্রাইব করুন! মেইল দ্বারা নিউজ আপডেট পান