রমজান বিন মোজাম্মেল । গুচ্ছ কবিতা
রমজান বিন মোজাম্মেল । গুচ্ছ কবিতা
সব বিড়ালের এক-রাও...!

ওড়া পেন্টাগন থেকে মাথাভাঙা টুইনটাওয়ারে নিশান উড়াতে চায়...!

 

আর বুঝি প্রতিষ্ঠা হলোনা বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র!?

আগন্তুক বল্লো, কলে- পড়া বিড়াল আর ইদুর এই আর কি!

 

দুনিয়ার মজদুর এক হও...!

লেলিনের ভাঙা মূর্তির উপর দিয়ে বিশ্বায়নের শুরু।

 

মুখ থুবড়ে পড়া বাজার অর্থনীতির কালবেলা ফুরোয়নি,  তাতে কি!

  বর্বর ইসরায়েল বর্বরোচিত হামলাযজ্ঞে লাখো ফিলিস্তিনবাসী মারা গেছে ; মৃত্যু মিছিল দীর্ঘ হচ্ছে!

 

তথাপিও ওরা  মানুষের মৃত্যুপোড়িতে নিশান উড়াতে ব্যস্ত!!

 

আমাদের হাতে তখনো  সভ্যতার আদর্শের সভ্যনিশান। 

আমরা তখনো দণ্ডায়মান ; আদর্শের  সভ্য নিশান হাতে

 

আকষ্মিক ; বিসন্নচোখে আসে, বঙ্গ আকাশে লেলিহান দাবালনের মতো জ্বলছে আগুন...

বুঝা না বুঝার মাঝের ততোক্ষণে, সাতচল্লিশ থেকে মিলেনিয়াম চব্বিশ পর্যন্ত সকল অর্জিত ইতিহাস পুড়ে ছাই...

 

মানবতার কন্ঠে উদ্বেলিত প্রশ্নবানে 'বঙ্গ আকাশে কোথায় পুঁতবে বর্বরতার প্রতিবাদে সভ্যতার নিশান'!?

 

 পদ্মা মেঘনা যমুনা কে সুদাই... 

মিথ্যার হাওয়ায় লুট হওয়া মাটি কই? আকাশ কই?

নদী বলে,  "সব বিড়ালের এক- রাও...!?

তফাৎ যাও,  সব ঝুট হ্যায়" 

 


🔸🔸🔸

 

 

 

 উঁই আর ইঁদুরের মতো

 

উঁই আর ইঁদুরের এক- ব্যবহার

               যা পায় তাই কেটে; করে ছারখার!?

 

               শান্তিকামী দে- জনতা জানেন

উঁই আর ইঁদুর কখনোই বিশ্বাসী প্রাণী নয়

              বরং মানুষ যতো; তাদের- কিছু

উঁই আর ইঁদুর স্বভাবি কর্মকরিতকর্মা হয়...

 

বস্ত্র কাটে, কাষ্ট্র কাটে,  কাটে সমূদয়...

সুন্দর সব আসবাবপ; কেটে করে খয়!

 

মুখোশে মানুষ কর্মে জানোয়ারের পথে হাঁটবি কেন স্বপ্ন আঁকিস?

শান্তিকামী আমাদের চিরকাল- জ্বালাবি!!!

কন্ঠে বায়ান্ন বক্ষে রক্তস্নাত একাত্তর প্রজন্মরেরা

আসবার সরবতায় ; ফের- লেজগুটিয়ে পালাবে

 

বীরের জাতি বঙ্গবাসী নিন্দিত বিশ্বাসঘাতকদের

ধরে ফেলেছেন অভিনয় ;

মুখোশেমানুষ স্বরূপ অন্বেষণে আজ দেশবাসীর

কন্ঠে একই  সুর-তাল- লয়...

 

ধরাতলে নরাধম খল আছে যতো

                    ঠিক তারা উঁই আর ইঁদুরের মতো

 


🔸🔸🔸

 

 এক. 

তুমি পাশে থাকতে কেন আমার সময় কাটে অপেক্ষায়

দিনের আলোয় যেমন-তেমন রাত যে কাটে  যন্ত্রনায়।

 

আমি ঠিক ভেবে পাইনা কেমনে তুমি ঘুমাও বালিশ চেপে!

অন্যদিকে বারুদেভরা শরীরটা আমার উঠছে আরো ক্ষেপে।

 

ইচ্ছে জাগে আমাকে তুমি জড়িয়ে ধরো তুমুল বিস্ফোরণে

রাতে যেনো কালবৈশাখী ঝড় বয়েছে আমার হৃদয়- মনে।

 

এক্ষুণি বলবে সব বুঝেও কেন তুমি হয়ে উঠো অবুঝ

এমন তো নয় আমার রক্তটাই লাল তোমারটা সবুজ!

 

আমি বলি সময়ে সূর্যের আলোটা না সরে যাবে দূর

তখন কিন্তু চাইলেও পাবেনা আর ; আগের মতো রোদ্দুর।

 

খানিক বাদে বলবো,পড়ন্ত বেলায় আমার কেমন অনুভব।

তার আগে তুমি বলো শরীর বিহীন প্রেম কী কভু হয়েছে সম্ভব?

 


 

🔸🔸🔸

 

 

শোকবার্তা


(রিয়েলফ্রেণ্ড- মামুন-এর স্মরণে)

 

চৌহরদী ঠিক করে মনের মাঝে চিরস্থায়ী বসতি গড়েছে হৃদ্ধতার আর্তনাদ।

ভায়োলিনটার স্কেলে স্কেলে বাজছে করুণ সুর, আমার

কীবোর্ড, মাউসে আকস্মিক নীরবতায় জানান দেয়-

রিয়েলফ্রেণ্ড- ’ মামুনেরআকস্মিক চলে যাওয়ায় অবরুদ্ধ হয়েছে জীবন

 

থেমে যাওয়া ফুসফুসের উঠানামা নির্ণয়ে ব্যর্থ

বিশ্বের তাবৎ কার্ডিলোজিষ্ট,

এরচেয়ে ভালো বলতে পারে

সিডর, আইলায় বিদ্ধস্ত স্বজন হারানো প্রাণ...

🔸🔸🔸

 

অপেক্ষারঅষ্টপ্রহর

(” সত্য ঘটনা অবলম্বনে”)

তোমার একমাত্র বড়বোন আমার জীবন সঙ্গীনি

 মনের অজান্তেই গেয়ে উঠে

কে-  যা      রে বাটির গান গা    য়া

আমার ভাইকে কই্ও নাইর নিত আইয়া

 

আমার মতো সবাই জানে, তুমি চলে গেছো না ফেরার দেশে 

ইচ্ছে থাকা সত্বেও তাই আর ফিরবে কোনদিন...

তথাপি

তবু্ও শুনতে কী পাও?  দেখতে কী পাও?

একমাত্র বোনে তার একমাত্র আদরের ভাই হারানোর শোকের মাতমে স্মৃতিশক্তি

লোপ পাওয়া পাগলপ্রায় মনে অনাকাঙ্খিত প্রত্যাশা...

 

সময়ে- অসময়ে তোমার স্মৃতি তাঁকে বরশীতে

গেঁথে থাকা মাছের মতো চরকি ঘুরাচ্ছে-...!?

 

মানা- না মানার দ্বন্দে কোনো এক অজানা ঈঙ্গিতের

অপেক্ষামান মনের প্রত্যাশা

 বরাবরের ন্যায় গভীর রাতে কুয়াশা ভেদ করে তুমি এসে বলবে...

 

পদ্মলক্ষ্মী বোন আমার, দড়জাটা একটু খোলনা। আর কোনদিন ফিরতে দেরী হবে না'

 

 

🔸🔸🔸

 পড়ন্ত বিকেলের গল্প

জানালার রডগুলো মরচেপড়ে ধারন করেছে চা-রঙ

যেখানটিতে ধরে প্রতিদিন বাইরে তাকাই, আকাশ দেখি

আজ রডের অবশিষ্ট শুধু সেই ঝিলিক ঝিলিক হাসি।

 

উৎকলিত চোখ তাই আকাশ রেখে মরচেপড়া রডগুলি দেখে...!

 

মুখোমুখি তুমি- আমি  দিনান্তে বিছানায় শুয়ে, পূর্ণিমার চাঁদ দেখি।

হঠাৎ চোখে পড়ে চাঁদের একাংশ ঢেকে আছে  ঘনকালো মেঘ...!?

 

রঙের উঠা-নামায় জীবন জলের ঢেউ…!

 

প্রতিদিন যেই বালিশ ঢেকে থাকে প্রিয়সীর ঘনকালো কেশের জোয়ারে

                                আজ যেন তায় ভাটা...!?

 

বিচলিত মন নীলিমায়; ততোক্ষণে জমে উঠে পর্বত-পর্বত বরফমেঘ...

সময়ের দৌঁড়ে হারানো সময়ের; নদীর স্রোতের অপেক্ষায় থাকে বৃদ্ধ মাঝির বৈঠা...!?

 


 

🔸🔸🔸

 

দুই.

আঁকাবাঁকা মেঠো পথ আর মেরে ফেলেছো নদী

স্বাধীন বাংলায় আজও বয়ে যায় রক্ত নিরবধি...

 

ফল - ফসলের ক্ষেতে নাই সবুজের হাতছানি

এখন তো আছে কেবল হাইব্রিডের চাষ খানি!

 

গ্রীষ্মে আকাশ মিশে আজও দূর পাহাড়ের গায়

ক্লান্ত কৃষক আর পায়না খুঁজে বটবৃক্ষের ছায়...

 

বোশেখ এলেই পান্তা- ইলিশের দাম হয়ে যায় চড়া!

গরীবের জন্যে উৎসব আসে না, নেমে আসে খরা।

 

নামেই কেবল বর্ষা আসে ঠিকঠাক ভাসে না জলে

তবু বাজারে ফসল আসে হাইব্রিডবীজ- এর ফলে!

 

শরৎ আকাশে ডানা মেলেনা সাদা মেঘের ভেলা

সহসাই আর চোখেও পড়ে না কাশফুলের মেলা।

 

হেমন্তে নতুন ধান আসে ঠিক, থাকেনা সেই ঘ্রাণ

লালন, হাসন, ভাটিয়ালি ভুলে, গায় রকের গান!

 

সময়- অসময়ে হাঁটে, শীত আসে শীতল হয়না প্রাণ

চোরের মুখে ধর্মের কাহিনি শুনে ধার্মিকরা হয়রান!

 

আজও প্রিয় স্বদেশ জুড়ে শিমুল - পলাশ ফোটে

বসন্ত এখন লালন হয়না; পালন হয় ড্রেস কোর্টে!

 

 

 

স্মৃতি- বিস্মৃতির কাব্য

-


সাবস্ক্রাইব করুন! মেইল দ্বারা নিউজ আপডেট পান