সু শা ন্ত হা ল দা র । গুচ্ছ কবিতা

কারবালা
বাটপারের হাটে চোর বিক্রি হয়
এমনই এক হাটে
ডাকাতের কাছে বিক্রি করেছি কবিতা সমেত সততা
যার মালিকানার শেষ অংশে লেখা
অখণ্ড সীমানায় পিতৃপুরুষের কষ্টার্জিত রক্ত-রঞ্জিত পতাকা
এমনই দেশ
জোছনার চাদরে ভেসে থাকে এলিগেটর চাষারা
রাতের বুক চিরে নেমে আসে এলিয়েন মহড়া
ভাগ্যের নির্মম পরিহাস
ছিনতাইকারীর কবলে আজ আমারই জননী-অগ্নিময়তা
নগ্ন মানুষ আমি
দেহ ভাগে হাত পা মাথা ছাড়া কিছুই পাবে না
পাঁজর খুবলে যদি দেখ
পেলেও পেতে পারো এজিদ অধ্যুষিত মহররম-'কারবালা'!
Death is final'
Translation : Farzana Naz
I never thought I would get this much
In the clear water of the crow, that old Roman Empire
The sky, the pair of stars, the spectacular Halley's comet of the night
Minerva, the infertile Augustine of the passionate night in the clear water
On your thoughtful days, the white-buck flies away, voluntary death
I had written on my feather wings 'Death is final' in the sins of this life
In the coal mine burned by love
If I get the Aphrodite of love and go to the earth to kiss her
Look how fierce the Boishakh storm is in the Brutusian hemisphere
I didn't think I would get this much
. I will see heaven and earth and the underworld in Odin's eyes
If I die, I will be burdened with a corpse on the couch of 'Valhalla'
Then Jupiter will be overwhelmed with emotion, by the self-absorbed 'Narcissus' in death!
'মৃত্যু-ই চুড়ান্ত'
এতটা পেয়ে যাব, ভাবিনি
কাক-স্বচ্ছ জলে পুরনো সেই রোমান সাম্রাজ্য
আকাশ জোড়া তারাখসা রাতের স্পেক্টাকুলাস হ্যালির ধূমকেতু
মিনার্ভা বুকখসা জলে কামুকী রাতের সেই নিঃবীর্য আগাস্টিন
তোমাদের ভাবনাপ্লুত দিনে সাদা-বক উড়ে যায় স্বেচ্ছামৃত্যু পাহাড়ে
পালক ডানায় লিখে ত ছিলাম 'মৃত্যু-ই চুড়ান্ত' আজন্ম পাপে
প্রেমে পোড়া কাঠ-কয়লা খনিতে
ভালোবাসার আফ্রোদিতি পেয়ে যদি যাই ভুসুকুপা চুমুতে
দেখে নিও বৈশাখ ঝড় কতটা সুতীব্র ব্রুটাসীয় গোলার্ধে
এতটা পেয়ে যাব, ভাবিনি
স্বর্গ মর্ত্য পাতাল দেখে যাব ওডিন চক্ষুতে
মরে যদি যাই লাশে ভার 'ভালহাল্লার' পালঙ্কে
জুপিটার তখন ভাবাপ্লুত হবেন আত্মমগ্ন 'নার্সিসাস' মৃত্যুতে!
নীলাচল ভাবনা
গাঙে যে কুমিরের বাস
তা জেনেই নদীতে সাঁতার কাটি
ডাঙায় যখন উঠে আসি, দেখি
ধারালো থাবায় মাটিতে এঁকে দিচ্ছে মরণের ফাঁদ হিংস্র জাগুয়ার
তাতে মরণের চেয়ে ভয় বেশি
যদি পানসি নৌকায় উঠে বসে ঝাঁপি খোলা সাপুড়িয়া
অতি কথনের দেশে বাচালের আধিক্য বেশি
আবার সত্য বচনে শত্রু বেশি
এতে পাণ্ডিত্যের আকার ছোট হলেও বেড়ে যায় দুর্বৃত্তের আধিক্য,
মনে করেছিলাম সিদ্ধার্থ বেশে অশোক ছায়ায় গৌতম এসেছে
নীলাচল ভাবনায়
পাড়ি দেব তিন সমুদ্র উঁচুনিচু পাহাড় সীতাকুণ্ড নাইক্ষ্যংছড়ি
নদীতে ডুবে দেখি
মোঘল সাম্রাজ্যে ঘিরে ধরেছে আমার-ই প্রতাপ আদিত্য ভূমি!
অনুরাগ
অনুরাগ যা কিছু ছিল
কৃষ্ণচূড়া ফুলে
তোমাকে পাবার অনিচ্ছাকৃত ভুলে
ঠিকুজি উলটে দেখি
সাপে কাটা 'লখিন্দর' বেহুলা বাসরে
স্রোতে ভাঙে নদী-তীর ডাল ভাঙে ঝড়ে
আমার বসন্তে ফুটেছিল ফুল রজনীগন্ধা হননে
বাঁশির বাতাস যদি ভুলে যায়, 'সুর' তার কণ্ঠ-ভরা আবেগে
জলের নিনাদে কে আর বুঝিবে....
মাতা-মোহরী মরে গ্যাছে ডাম্পিং তিস্তার ফ্যাসাদে!
রমণীয় আগুন
পাথরের ডানা মেলে উড়ে যাচ্ছি
তুমি বললে
চৈতন্য-বধে শিলা খণ্ডিত রচিত পুরাণ
তার কাছে যাও, দেখ
বাজ কাটা ডানা নিয়ে বসে আছে মুনি-ঋষিগণ
রমণীয় আগুনে পেলেও পেতে পারো মেঘেঢাকা শারদীয় তপোবন
কে জানতো পালকে আমার বরফ আচ্ছাদন?
আগুনে পোড়া ডানায় কখন যে হলো রমণী সম্মোহন
তা জানতে যখনই শরণাপন্ন হলাম তোমার
তুমি বললে
এ সীতা হরণ অভিশাপ, নিশ্চিত থাকো
হন্তারক বেশে এ যাপন নির্ঘাত শুদ্ধি অভিযান !
ধুলি-মাখা ছাই
শব যাত্রায় বড়ুয়ার হাত বড় অসহায় লেগেছিল
মনে মনে ভাবলাম- পাঁঠা কাটার গল্পটা শুনিয়ে যাই
পিছনে থাকা হেনরী, যে জোরে জোরে কাশছিল
শুনেছিলাম-স্বেচ্ছাশ্রমে বড় পরোপকারী লোক ছিল
তৃতীয় জন বিনোদ কুমার চৌধুরী
যার ভয়ার্ত নি:শ্বাসে আমার কপাল ঘামছিল
চতুর্থ জন- জন মিল্টন, নিশানা স্থির অলক্ষ্য প্রাঙ্গন
এরা আমার বন্ধু, সজ্জন
শেষ কৃত্যে এসেও দৃঢ় শক্ত পায়ে হাঁটছিল
আমি দেখলাম,দূরে... কৃষ্ণচূড়া তলে
কে যেন দাঁড়িয়ে আছে আবছা অন্ধকারে,
মনে করতেই দাউদাউ আগুন পাশফিরা সিথানে
আমি চিৎকার করলাম আকাশ বাতাস কাঁপিয়ে...
কেউ শুনলো কী শুনলো না
তা যখন ভুলে গেলাম, তখন দেখলাম
ধুলি-মাখা ছাই উড়ে যাচ্ছে গাঢ় এক অন্ধকারে!
বৃহন্নলা
বকলেস বাঁধা কুকুর
হিসি করতে গেলেও মালিকের অনুমতি লাগে
সঙ্গম তো বহুদূর!
মরা মানুষের চিতা দেখে দেখে ঘুমিয়ে পড়ি
স্বপ্নে যা কিছু ঘটে- মনে পড়ে তার কিছু কিছু,
মানুষের বয়স হলে বিস্মৃতি ঘটে
যেমন নিরুত্তাপহীন পড়ে থাকে পুরুষের কাম-দণ্ড
কেউ কেউ হারমোনিয়াম হলে বাতাসের আনুকুল্যে থাকে
মৃতদের চেগার দেয়া রাত মানসিক বিকারগ্রস্ত হলে
ঈশ্বর বৃহন্নলা সাজে
কামে, ভাবে আর হেলুসিনেশন গভীর হলে
পৃথিবী ভাসিয়ে জাগ্রত হয় গুরু-কূল
আর তাতে-ই....
সঙ্গম প্রিয়তায় হাঁপিয়ে উঠে পরিশ্রান্ত চৈতা কুকুর!