
সেলিম রেজা
জন্ম:২জানুয়ারি১৯৮১, চট্টগ্রামজেলারপতেঙ্গা থানারদক্ষিণ পতেঙ্গা- নাজির পাড়া, ৪১নং ওয়ার্ড।পৈতৃক ওমাতৃনিবাস একই।স্থায়ী ওবর্তমান ঠিকানা: ইউনুছ ভিলা, আছদআলী সারাংএরবাড়ী, দক্ষিণপতেঙ্গা -নাজিরপাড়া, ৪১নং ওয়ার্ড, থানা- পতেঙ্গা , জেলা- চট্টগ্রাম।পিতা : মোহাম্মদ ইউনুছ। মাতা: মোছাম্মৎ জয়নাবখাতুন। পেশা: চাকরি, কুয়েতপ্রবাসী (প্রজেক্টম্যানেজার , তানজিফকোকোম্পানি, সুবহান -কুয়েত) ।
সম্পাদিতপত্রিকা- ৭:মৃত্তিকা -(একটিসাহিত্যের কাগজ, প্রথমপ্রকাশফেব্রুয়ারি-২০০৯)।বৈশাখ-১৪১৪(বাংলাদেশদূতাবাস,-কুয়েত, প্রকাশকাল:বাংলানববর্ষ-১৪১৪)।অভিষেক-(প্রথমপ্রকাশ২০১০)।স্লোগান-(প্রতিবাদীকবিতায় প্রজন্মেরবজ্রকণ্ঠ -ফেব্রুয়ারি২০১৩ ইং)। দেশান্তর- (প্রথমপ্রকাশঅক্টোবর-২০১৩)।বর্ণমালা-( প্রথমপ্রকাশ ডিসেম্বর-২০১৮) ।বৈশাখ- ১৪২৫(বাংলাদেশ দূতাবাস,-কুয়েত , প্রকাশকাল:বাংলানববর্ষ- ১৪২৫)
লেখারবিষয়:কবিতা ওপ্রবন্ধ মূলবিষয়অনুষঙ্গ।
প্রকাশিতগ্রন্থ- ১১: সপ্তর্ষী নক্ষত্রমালা (কবিতা, ২০০৫)।উত্তরণ ( কাব্যসংকলন, বইমেলা-২০০৬)।কালউত্তরণ (কাব্যসংকলন, বইমেলা- ২০০৭)।দূরপরবাসেকবিতারআকাশে(কাব্যসংকলন , বইমেলা-২০০৮) ।
স্বপ্নমৃত্তিকায়নবীনঘাসফুল (কবিতা,বইমেলা-২০০৯) ।কবিতাভেসেআসে বোহেমিয়ান বাতাসে (কাব্যসংকলন, বইমেলা-২০১০)। ইদানীং এবংঅনিন্দিতা ( যৌথকাব্যসংকলন- ২০১২)। তবুওকবিতা (কাব্যসংকলন, বইমেলা-২০১২) ।সাত তারারময়ূখ (যৌথ কাব্যসংকলন-২০১৬)। কবিওকবিতার পড়শি (কবিতা, প্রথম প্রকাশবইমেলা-২০১৬; দ্বিতীয়প্রকাশ বইমেলা-২০১৯) ।সূর্যমুখী ফিনিক্স(কবিতা,বইমেলা- ২০১৯)।আকাশে উড়ুক্কু শব্দমালা(কবিতা,বইমেলা- ২০২১)
পুরস্কার: প্রবাসীসাহিত্য পরিষদপুরস্কার (কুয়েত-২০০৬ )।বৈশাখীওমরমীবাউলসাংস্কৃতিকগোষ্ঠীপুরস্কার (কুয়েত-২০১২ )।বাংলাদেশদূতাবাসকুয়েত পুরস্কার (কুয়েত -২০১৫)। বাংলাদেশসাহিত্যঅঙ্গন পুরস্কার (কুয়েত-২০১৫)। বিশ্ব মানবধর্ম বিকাশ পরিষদ করিমগঞ্জ, ভারত পুরস্কার ( আন্তর্জাতিক সাহিত্য মহাসভা-২০২২ স্বর্ণ পদক) । সমধারা সাহিত্য পুরস্কার -২০২৫ ।
আদিম গুহা
হাহাকারে ঝিমিয়ে থাকা মানবতা দেয় দৌঁড়
মৃত্যু বিলাপে যেন ভাঙছে নৈঃশব্দ্যের আড্ডা
মানুষের অভিশাপে নিষ্ফল উপাসনা
পেরোতে পারে না স্রষ্টার চৌকাঠ
আর্তচিৎকারে স্বয়ং ঈশ্বর;
মাথা নুয়ে ধ্যানমগ্ন কালের অহম
ভায়োলিনে বাজছে করুণ সুর
সময়ে শূন্য দ্রাঘিমায় শোনা যায়
মন্দিরের কীর্তন
সময়ে ভুলের খণ্ডচিত্রে দেখা যায়
হাঙরের জংশন
আর্তনাদ পতনের আয়ু মাপে
ডাকাতসম্প্রদায় এক খোয়াড়ে
ইদানীং অলীক স্বপ্নে মানুষ
নিচ্ছে ঠাই আদিম গুহায়
জোনাকির আলোয় জ্বলে নাকছাবি
ইচ্ছেগুলো ভুল করেই এসেছিলে ফেলে
সাত সকালে বকুলতলায় বেদনা কুড়াতে
কতটা পথ হেঁটে এসেছো;
নিঃসঙ্গ মানুষ সঙ্গ পেতে টেনে নিলে বুকে
শব্দের সাথে শব্দ গেঁথে কাছে পেতে সময়টাকে
ইদানীং জোনাকির আলোয়
অবাক বিস্ময়ে তাকিয়েই থাকো
সে যে কখন কবে নিখোঁজ!
নীরবে নিভৃতে কাঁদো
জীবনের সব হারিয়েই বুঝলে
স্বপ্ন কার ছিল?
দুরন্তপনায় বেশ নামডাক
লুকোচুরি নিজের সাথেই
ভাবনার অন্তরালে ডুবে যেতে কতশত বার
লুকিয়ে রেখেছিলে রক্তজবা বুকের ভেতর
প্রিয়ফুল, নাকছাবিটাও পেখম মেলতো একদিন
এখন আমি একা, তুমিও একা
চলো পা বাড়াই, এগিয়ে যাই
ঢুলে আসা ক্লান্তিচোখে তৃষ্ণার্ন্ত চুম্বন
বার বার বলেছিলে
ফিরে যাবে নিঃসঙ্গতার কাছে
যে ছুঁয়ে দেয় নরোম আঙুল
কমলাভ ঠোঁটের তিল
বাঁধভাঙা জোয়ারে সাঁতরে কূলে উঠার অদম্য ইচ্ছে
কালের অহম
রাগের করাতে কেটে ফেলা দৃষ্টি
টুকরো রঙিন কাঁচ, রক্তচোখ-পোড়াদেহ
আয়নায় টোকা দেয় কালের অহম;
রাতারাতি সমুদ্রবুকে সাঁতার শিখে
ঢেউ ঢেউয়ের সাথে সখ্যতা গড়ে
কিশোরী বেলা আলতার স্বপ্নে
নৈঃশব্দে পুষে মেঘজারুল বেদনা
নিঃসঙ্গ বাতাসে উড়ে হলুদফুল
ছিন্ন পালকে পলাতক পাখি
শিকারির তীরন্দাজে আহত ঘাসফড়িং
শূন্যতার বুকে আঁকা প্রেমরেখা
পথে নামতেই দুঃখের সাথে দেখা
সে কী কান্নাকাটি বুকে জড়িয়ে
পথিক কখনো থেমে থাকে না পথে
ফিরতে পথেই দেখা হবে হয়তবা!!!
মরা পাতায় ফিরে প্রাণ
চোখ মেলে তাকায় দূরপানে
কে যেন দাঁড়িয়ে আছে শরীর ঘেঁষে
কতোকাল ধরে!
শূন্যতার বুকে এঁকে দিলো প্রেমরেখা
কতোকাল পরে!
নৈঃশব্দের রাতে লোপাট জোছনা
কেউ জানে না
কেউ দেখে না
কেউ ডাকে না
আগুনে পোড়া একদল পাখি
নগ্ন তলোয়ারের ধারালো পোঁচে রক্তাক্ত বুক
বধির সময়ে ঘুরে দাঁড়াতেই দ্বিখণ্ডিত সাহস
তুমিই জ্বলন্ত আগুন, তবুও পোড়ার ভয় নেই;
দূর ঠেলে কাছেই, অহোরাত্রি সখ্যতায় জড়াই
সময়টাই এমন ভিন্নতায় কড়া নাড়ে
বয়সটাই এমন দিনেদিনে শুধুই বাড়ে
ধার নেয়া আকাশটা রেখে দেবো বুকপকেটে
স্বপ্নের সিঁড়ি বেয়ে পাড়ি দেবো মন- মন্দিরে
মায়ার সনদ নিমগ্ন দুপুরে
অযোগ্য ভেবে স্বপ্ন পাঠালে নির্বাসনে
দীর্ঘ সময়ের ফাঁক গলে দীর্ঘ বাসনা
জড়ো হলো একাকী কান্নার আঙিনায়
যে আকাশে আমাকে খোঁজ
সেখানেই আমি, কিভাবে বুঝো!
সুখটানে একটা সিগারেট...
স্বপ্নিল আকাশ আর একদল পাখি
নীরবতার পেয়ালায় চুমুক
নির্বাক নদীতে সাঁতার কাটে আঁধারের সন্ন্যাসী
নীরবতার পেয়ালায় চুমুক বসায় কচি দুটি ঠোঁট
গুরুজির ধ্যানমগ্ন ভাঙে,হীমশীতে খোঁজে শরীরের ওম
এলোমেলো সবকিছু আলিঙ্গনেই দেহতত্ব
নেশার ঘোরে খুলে যায় বক্ষবন্ধনী অদম্য ইচ্ছেয়
সোহাগ স্রোতে সমুদ্র বিলাস-শাদাজল;
নীলবিছানায় শাড়ির আঁচলে জ্যোৎস্না নেমে আসে
এই প্রথম নগ্নদেহের বাঁকে উষ্ণতা
নিঃসঙ্গতার সাথে আড়ি
পানকৌড়ির সাথে দীর্ঘ আলিঙ্গন…
মা, কেমন আছো
মা, কেমন আছো
বাবাকে হারানোর পর আতঙ্কে কাটছে সময়
প্রতিটি মুহুর্ত ভয়ে-শঙ্কায় কাটে
বাবার নিথর দেহের পাশে ফ্যালফ্যাল চোখে
অসহায়ের মতো তাকিয়ে থাকতে দেখেছি
অজস্র কান্না-অশ্রুজল লুকিয়ে ছেলের অপেক্ষায় ছিলে
ওয়েটিং লবিতে সাদাচাদরে ঢাকা বাবার সারাশরীর
আধমরা মাকে অতিশোকে পাথর হতে দেখেছি
ইমিগ্রেশন এম্ব্যুলেন্সে বাবার লাশঘরে ফেরার পথে
মায়ের চোখের দিকে তাকাতে পারিনি, তবেবুঝেছি
আবারও উঠে দাঁড়ানোর সাহস আমিই ছিলাম
শত সহস্র চিৎকার চেপে শুধুই তাকিয়ে ছিলে
মা এই মা-শোনো
ব্যথা শোক ভুলার শেষ আশ্রয় তুমি
জানি মা’র একজোড়া চোখ হরহামেশা খুঁজে
তার
ভ্রুণ থেকে বেরিয়ে আসা এক একটি
ফুল নিরাপদে থাকুক, আনন্দে হাসুক পৃথিবীতে;
মা-আমরা তো এখনো অবুঝ শিশু
তোমার কোলের মতো নিরাপদ আশ্রয় চাই
মা-নামক ছোট্ট শব্দের গভীরতা আটল্যান্টিক-
প্যাসিফিক
মহাসাগরকেও হার মানায়
মা-মৃত্যু আঁধারে পাড়ি দেবার আগেই পথিক হতে চাই
মা-নামক সূর্য অস্তমিত হবার আগেই ফিরে যেতে চাই
সুদূরের প্রতিমা
দীর্ঘ সময়ের ফাঁক গলে দীর্ঘ বাসনা
জড়ো হলো একাকী কান্নার আঙিনায়
বুকের ভেতর হইচই, ভাঙনের শব্দ
তবুও মনের ক্যানভাসে সুদূরের প্রতিমা
হেঁটে যায় আলতো পায়ে গভীর অরণ্যে
বিকেলের স্নিগ্ধরোদ ঘাসের পালকে করে খেলা;
জীবন বাতাসের সুরে হাঁটে আলপথে
স্বপ্নের সাথে চোখাচোখি-কানাকানি
আকাশের বুকে ছুঁড়ে দেয়া চুমু;
খোলাচুল নগ্নপায়ে বালিকা বালিয়াড়ি সমুদ্রে
দূরবীন চোখ দেয় ডুবসাঁতার নীলরোদ্দুরে
সূর্যস্নানে অবিরাম ডাকে ভিনদেশী কায়া
মৌনতায় হয়না যাওয়া পড়ে থাকে মায়ায়
ধ্যানমগ্ন ঋষি ইচ্ছের দেয়ালে হেলান দিয়ে
নির্বাক নদীতে খুঁজে সৃষ্টির রহস্য
দীর্ঘ আলিঙ্গনে ভাঙে নিরবতা
দূরের কপোতি স্বপ্নের পেয়ালায় বসায় চুমুক
মরিচিকা
দূরের নীলিমা হেঁটে চলে
অনেকটা পথ মাড়িয়ে
মনখারাপের দিনেও শহরের
অলিগলি পেছে ফেলে
একা ওড়ে মখমল মলিন বেদনায়
কাজল কালো চোখের পাতা
পোড়ায় ধূ ধূ প্রান্ত্র;
দিগ্বিদিক ছুটে চলা জিপসি তরুণী
যেন রাতের ছায়ায় আলোর পরশ
দুর্দান্ত ভিড়েও নবীন স্বপ্নগুলো
জ্বলজ্বল চোখের ভেতর
পুড়ে যাই কষ্টে, অসময়ের আগুনে
আর কত প্রতীক্ষা! মোক্ষম সময়ে
বুক পেতেছি পিপাসার আলিঙ্গনে
এবার থামো, অধরা থেকো না আর্…
শূন্যহাতে মৃত্যু
কিছুটা বদলাও প্রেমিক পুরুষ
মুক্তিলাভের আশায় অনেকে মরে যায়
কান্নাররোল পড়ে মরদেহের চতুর্পাশে
একদিন দু’দিন
ভালোবাসার মানুষগুলো যে যার মতো
সংসারে দেয় ডুবসাঁতার
যে গন্তব্য দূরযাত্রায়
শোকবিলাপও আজ মায়াবী করুণ
স্মৃতি কেবলই বাজেয়াপ্ত শব্দ
হ্নদয় ব্যাকুল হারিয়ে প্রেম
কান পেতে আছে সময়ের দুয়ারে
রোদনের স্রোতে প্রেমিকার শোকগাথা
অপেক্ষায় থাকা কেউ রাখে না কথা
মায়ার রহস্য ভিন্ন আঁচে
শূন্যহাতে মৃত্যুই একমাত্র স্বীকৃতি
মোক্ষমসময়
দূরেরকপোতি
ভালোবাসায়ছুঁয়েদিকশব্দেরউঠোন
আনমনেহাঁটুক
জীবনবাতাসেরসুরেহাঁটাআলপথধরে
দহনজ্বালা
প্রচণ্ডজ্বরেপোড়েযাওয়াগা
কেউদেখেনা
অন্তরপোড়েকতটাহয়েছেঘা
সময় ও সাহস
সময়ভেঙে পকেটে পুরছে প্রান্তিক কয়েদি;
মাথানিচু করে দাঁড়িয়েথাকাহেভবিতব্য!!
কিছুএকটা বলো অসীমসাহসে ..
নিঃসঙ্গতা
পুরাতনসিন্দুকে
তোলারাখা
স্মৃতিরখতিয়ানরোদ্দুরেশুকাতে
দিলাম;
চিঠিরভাঁজে
লালগোলাপগুলো
ইদানীংনিঃসঙ্গতারনীরবসাক্ষী
বুকেরগহীনে
পোড়াক্ষতটাও
অনুতপ্ত
দিনলিপি-২২১
সময়কেডাকি
রোদপোহাতে
কেবলইমুখ
ফিরিয়েনেয়,
আর
আমিদুয়ারে
দাঁড়িয়েদেখি
অভিজাত্যেরবড্ডঅহংকার
মাটিরঙা দুঃখ
এইতো
সেদিন দুঃখকে পাশ কাটিয়ে-
সুখের কাছে যেতেই বেঁধে গেল হট্টগোল
তবুও কিছুটা মানিয়ে বেশ এগুচ্ছে স্বপ্ন;