আবদুল হাসিব- এর দুটি কবিতা
আবদুল হাসিব- এর দুটি কবিতা

একনজরে কবি আবদুল হাসিব

কবি আবদুল হাসিব বিশ্ব কবি রবী ঠাকুরসুন্দরী শ্রীভূমিসিলেট জেলার বিয়ানীবাজার উপজেলায় অবস্থিত শ্রী চৈতন্যের অন্যতম পার্ষদ শ্রীবাস পন্ডিত ও কবি বৃন্দাবন দাশ ঠাকুরর জন্মস্থান কসবা গ্রামে ০১ জানুয়ারি ১৯৬৩ সালে কবি আবদুল হাসিবর জন্মঘটি-বাটি, ধূলিখেলা, ধারাপাত, বর্ণমালা, জন্মলগ্ন গৃহাঙ্গণ এবং কসবা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সমাপণ হয়েছেসাত বছর বয়সে মাতৃবিয়োগ ঘটলে কবি জীবনকে নতুন মাত্রায় চিনতে শুরু করেনপঞ্চখন্ড হরগোবিন্দ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এস.এস.সি. পাশ করে বিয়ানীবাজার সরকারী কলেজেই স্নাতক বাণিজ্য পর্যন্ত লেখাপড়াছাত্রাবস্তায় ছাত্ররাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেনকবি আবদুল হাসিব ১৯৮০/৮১ সনে কলেজ ছাত্র-সংসদে সাংস্কৃতিক সম্পাদকের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন

১৯৮৪/৮৫ সালে বাংলাদেশ মুজিববাদী ছাত্রলীগ কলেজ শাখার কার্যকরী কমিটির সভাপতি ছিলেনঅতঃপর, তিন বছর সরকারী চাকরী শেষে ২৪ বছর বয়সে কবি কানাডা প্রবাসী হয়েছেনকবি আবদুল হাসিব ষষ্ট শ্রেণীর ছাত্রাবস্তায় ছড়া-কবিতা লেখা শুরু করেনতিনি প্রধানতঃ কবিতা ও ছড়া লিখেনএমন কি তিনি বাস্তব প্রতীতি নিয়ে নিরন্তর রচনা করে যাচ্ছেন প্রবন্ধ-নিবন্ধ, গল্প ও উপন্যাস

কবি আবদুল হাসিব একজন নিষ্টাবান সাংবাদিক হিসাবেও উত্তর আমেরিকার পত্র-পত্রিকায় গুরুত্বের সাথে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেনএক সময় কানাডার সাসকাচোয়ান প্রদেশ থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক যোগাযোগাপত্রিকার অটোয়া বুর‌্যেযা প্রধান-এর দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন

এপর্যন্ত কবির প্রকাশিত বারোটি গ্রন্থের মধ্যে তিনটি কবিতাগ্রন্থ, চারটি ছড়াগ্রন্থ, দুটি গল্পগ্রন্থ, একটি একাত্তরের স্মৃতিগ্রন্থ, একটি রচনাগ্রন্থ এবং একটি জীবনী গ্রন্থ প্রকাশিতব্য গ্রন্থ তিনটি

কবি আবদুল হাসিব-এর লেখা কানাডার টরন্টো শহর থেকে প্রকাশিত বাংলা কাগজ’, ‘দেশের আলোআজকালএবং সাসকাচুয়ান থেকে প্রকাশিত যোগাযোগপত্রিকায় নিয়মিত বেরুচ্ছেলেখা বেরুচ্ছে আমেরিকার নিউ ইয়র্ক শহর থেকে প্রকাশিত ঠিকানাদর্পণপত্রিকায়যুক্তরাজ্যের লন্ডন শহর থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক সুরমা’, ‘সাপ্তাহিক জনমতএবং লন্ডন শহর থেকে শাহনাজ সুলতানার সম্পাদিত নারীপত্রিকায় কবির নারীবাদী লেখা নিয়মিত ছাপা হচ্ছেতাঁর লেখা ছাপা হচ্ছে কবির জন্মস্থান বিয়ানীবাজার থেকে প্রকাশিত, ‘সাপ্তাহিক দিবালোকসাপ্তাহিক নবদ্বীপ

বাংলাদেশের দৈনিক ইত্তেফাক-এর কচি কাঁচার আসরএর পাতায় এবং দৈনিক যুগান্তর-এর শুক্রবারের সাকয়িকী’-এর পাতায় অনিয়মিত ভাবে প্রকাশিত হচ্ছেরাজধানী ঢাকা থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক গোর্কী এবং সাপ্তাহিক স্বদেশ খবরনামক সাপ্তাহিকী দুটোতেই তাঁর লেখা প্রকাশিত হচ্ছেইউরোপ ও আমেরিকা থেকে প্রকাশিত বিভিন্ন বাংলা পত্রিকা এবং ওয়েভ পত্রিকাগুলোতে তাঁর লেখা প্রকাশ অব্যাহত আছে

২০১৫ সালে যুক্তরাজ্যের সংহতি সাহিত্য পরিষদএর পক্ষ থেকে কবি আবদুল হাবিস সম্মাননা পদকলাভ করেনস্বদেশ বিরহী নিমগ্ন সংসারী কবি আবদুল হাসিব বর্তমানে তাঁর স্ত্রী রুনা বেগম এবং পুত্রত্রয় পল্লব, প্রবাল ও প্রদীপ নিয়ে কানাডার বৃহত্তর মন্ট্রিয়ল শহরের বুক চিরে প্রবাহিত সেন্ট-লরেন্ট নদীর তীরবর্তী লঙ্গিল শহরেস্থায়ীভাবে বসবাস করছেন

 

উদ্বাস্তু

 

শান্ত বাংলার প্রান্তরে বন থেকে বনান্তরে
মুক্ত মনে উড়তো শালিক শান্ত নীলিমায়
পরবাসে এসে দেখি
পাখির প্রাণে শান্তি যে না পায়

সারা দিনের কর্ম শেষে ফিরে আসতো নিবাস গৃহে
খড়ের ঘরে নিশি যাপন ছিলো রত্নময়;
এখন দেখি অট্টালিকায় সুখের স্বপ্নে দুঃখ কেবল হয়

বাংলা মায়ের শালিক পাখি 
করুণ সুরে বলছে ডাকি
এই বিভূঁইয়ে নিবাস গড়া বড়ই কষ্টময়;
আরো কিছু দোয়েল কোয়েল
এতো কষ্ট-দুঃখ-ক্লান্তি কেমনে ওরা সয় !

শালিক বলে কী যে করি অন্তরদ্বন্দ্বে নিজেই মরি
ম্যাপল গাছের শাখায় কেমনে পলাশ শিমুল পাই !
ফিরে যাবার প্রবল ইচ্ছে, তবু যে ভাই
আগের মতো পথটা খুলা নাই

বরফঢাকা এই মাটিতে মেশিনসম জীবনটিতে
শিশিরমাখা দূর্বা ঘাসের পরশ যে আর নাই;
ভিটে-মাটি ছেড়ে এসে
জবর খাঁটি উদ্বাস্তু হয়ে গেলাম ভাই

 

 

নিথর বংশীর নিরব ক্রন্দন

 

আমি আজো অশ্বত্থ তলে যাই,
ফাল্গুনী বনের কুহুতান
আমাকে আজো ঘরছাড়া সন্ন্যাসী করে তুলে

নিশিথিনী সহচরী; সাথে বাঁশের বংশী,
রাত্রির বুক চিরে সুর ওঠে, আবার থেমে যায় বাঁশী 
আবার ওঠে সুর, বাতাস কাঁপে, পাতারা গায় করুণ বন্ধনাগীতি !

জোছনার আলোয় ভাসে নির্বাক অধীর; 
মরানদীর কষ্টের মতো বিষণ্ণ মুখ,
ভরাট বুকের মাঝে খাঁ খাঁ বালুচর, প্রাণহীন ঝিনু্‌ক, খড়কুটো,
মরা ঘা্‌ট, ভাঙা কলসী, রমণীর হাতের রঙ্গিন চুড়ির টুকরো,
চঞ্চল দোয়েলের অসংখ্য পদচিহ্ন ! অতঃপর,
নিরন্তর প্রবাহিত থাকে -নিথর বংশীর নিরব ক্রন্দন

 




 

 

 

 

 

 

 


সাবস্ক্রাইব করুন! মেইল দ্বারা নিউজ আপডেট পান

Error
Whoops, looks like something went wrong.