লুৎফুন নাহারের দুটি কবিতা
লুৎফুন নাহারের দুটি কবিতা

সাধু সাবধান!


প্রফুল্লতার খামে ভরে আসে না প্রতিটি দিন

তবুও তো সে আসে 

বাতাসে ছড়িয়ে আলোর রেণু, রুটিন মাফিক।


ত্বক হতে ছাড়িয়ে নিয়ে আঁশ 

জল ছেড়ে স্থলে করি বাস—- নদীর উপর

নগর বাড়াই, আয়েশ খুঁজতে অট্রালিকায়।

 

কথা হতে কেড়ে নিলে সুর, তানপুরাটা কেঁদে-

যায় একাকী বাদকের হাতে...সুর হেফাজতের ফরিয়াদে

গুমরে কাঁদে হাত ও আঙ্গুল কোরাস মোনাজাতে।


পেখমের আর্জি মঞ্জুর হয়েছিলো তাই 

ময়ূর পেয়েছে ঈর্ষণীয়  আকর্ষণ

আনন্দও যে ঈর্ষা জাগাতে পারে মনে, আন্দাজ করা দায়।


পাখি থেকে কেড়ে নিলে উড়ালের অধিকার 

সকাল-সন্ধ্যা চলবে নিঃসঙ্গতার পত্র পাঠ।

যে পত্রের লাইনে লাইনে লেখা থাকবে 

মানবজাতির অপরাধের ডক্যুমেন্ট, স্ট্যাটিসটিকস যোগে।

ফলে, আক্রোশে ফেটে পড়বে বন

দাবানলে উজাড় করে দেবে মাইলের পর মাইল...



অতএব, সাধু সাবধান!

নিজ ঈর্ষায় ডেকে এনো না নিজেরই সর্বনাশ!

সাধু সাবধান! 

গণনা

যোগ-বিয়োগ, গুন-ভাগ

শেখার পর...করে যাচ্ছি যথেচ্ছ ব্যবহার 

সহযোগিতার বদলে

জীবন গড়ে তুলেছি প্রতিযোগিতার আদলে।


বিয়োগ হয়ে গ্যাছে ইমোশন

মোশন বেড়েছে যত্রতত্র, এমন কি সম্পর্কেও।

শুধু বিয়োগ করছি না রিপু ও রোষ

সুবিধাবাদে ভরিয়ে ফেলেছি দেহের প্রতিটি কোষ।



গুণন করে চলেছি লোভ-লালসা 

কামনা-আকাঙ্খা, ক্ষোভ ও ঈর্ষা

গনায় ধরতে ভুলে গ্যাছি দায় ও দ্বায়িত্ব

স্বার্থ এবং আত্মকেন্দ্রিকতা করে আয়ত্ব।


অথচ, পুস্তকে পাঠ ছিলো পরোপকারী হবার

পরিবর্তে, আমরা পর-

        হতে শিখে গ্যাছি দ্রুত; আপনজন হতে।


পরের ধন, পরের মন ও পরের সম্মান নিয়ে 

খেলতে আমাদের বেশ আনন্দ আনন্দ লাগে। 


কিন্তু, আনন্দ পাবার কথা ছিলো

সুখ ও স্বাচ্ছন্দের ভাগাভাগিতে, সম্পদ ও 

খাদ্যের সুষম বন্টনে...মানুষে-মানুষে;

মনের হরষে, মনখারাপে নয় ঘুণাক্ষরে।



বলতেই পারি, আমরা শিখেছি 

যোগ-বিয়োগ ও গুন-ভাগের স্বার্থক ব্যবহার

যা পরিহারে, দিন নিভে গেলে

লণ্ঠন জ্বলে উঠবে মানুষের প্রাণে...বারবার।


সাবস্ক্রাইব করুন! মেইল দ্বারা নিউজ আপডেট পান